পুকুর ভরাট করে বিক্রি! মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরই গ্রেপ্তার পুরুলিয়ার যুবক
প্রতিদিন | ২৮ জুন ২০২৪
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুকুর ভরাট রোখা নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরই তৎপর প্রশাসন। পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালির অভিযোগের ভিত্তিতে সোনু আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রায় ২০২০ সাল থেকে ওই পুকুর ভরাট চলছে। ধৃত সোনু আলম ওই পুকুর কিনে অন্যকে বিক্রি করে দিয়েছিল। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুকুর ভরাট নিয়ে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
পুরুলিয়া পুর শহরের সাত নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় পাশাপাশি তিনটি পুকুর রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে রামবাঁধ পাড়া এলাকায় পুকুর ভরাটের কাজ চলছিল। এই বিষয়টি পুরুলিয়া পুরসভার নজরে আসতেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যেই ওই পুকুরের মালিকানায় থাকা লোকজন আদালতের দ্বারস্থ হন। তার পর থেকেই ওই পুকুরটি আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এছাড়া তার পাশেই কমলাবাঁধ ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ মৎস্য দপ্তর, সাধারণ প্রশাসন ও পুরুলিয়া পুরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেবে বলে জানা গিয়েছে।
এই বিষয়ে পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালিকে পুলিশের তরফে ডেকে পাঠানো হয়। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সমগ্র জেলা জুড়ে কোথায় কোথায় জলাশয় রয়েছে আমরা তার একটা তথ্যপঞ্জি তৈরি করব। যাতে সহজেই নজরদারি চালিয়ে পুকুর ভরাটের কাজ দ্রুত রোখা যায়। পুরুলিয়া শহরের যে এলাকায় জলাশয় বুজিয়ে দেওয়ার খবর আমাদের কাছে এসেছে এই বিষয়টিতে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। “
বেশ কিছুদিন ধরেই পুরুলিয়ার তিন পুর শহর পুরুলিয়া, ঝালদা ও রঘুনাথপুরে পুকুর ভরাট করে নির্মাণ কাজ চলছে বলে অভিযোগ। এই তিন পুর শহরেই পুরসভা পদক্ষেপ গ্রহণ করে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শেষমেশ কোনও না কোনও কারণে ফলপ্রসূ হয় না। ফলত জলাভূমি বুজে যায়। পুরুলিয়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রামবাঁধ পাড়া এলাকায় এই পুকুর ভরাটের পেছনে জমির মালিকরাই যুক্ত রয়েছেন। প্রোমোটারদের হাতে দিয়ে জমির যা দাম তার দ্বিগুণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে জলাশয় বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, “পুকুর ভরাট নিয়ে যেখানে যা বেনিয়ম হচ্ছে এই বিষয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা পেলেই আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব।” পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জলাশয় ভরাট রোখার ক্ষেত্রে পুলিশ পৃথকভাবে যেমন নজরদারি চালাবে। তেমনই পুলিশ, সাধারণ প্রশাসন ও পুরসভা মিলিয়ে একটি নজরদারি কমিটি থাকবে।