পঞ্চায়েত অফিসে আইসক্রিম খাওয়া, স্বামীর সঙ্গে রোমান্স! প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তৃণমূলের
প্রতিদিন | ২৮ জুন ২০২৪
সুমন করাতি, হুগলি: পঞ্চায়েত অফিসে বসে দই, আইসক্রিম খান প্রধান। এমনকী স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হলে সেখানেই মেটান। কাজের জায়গাটাকে নাকি রোমান্সের জায়গা বানিয়ে ফেলেছেন তিনি! এমনই একগুচ্ছ অভিযোগ নিয়ে পোলবার রাজহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রিয়াঙ্কা সুরের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। বুধবার অফিসের সামনে প্রবল বিক্ষোভও দেখান তাঁরা। এদিকে, সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রিয়াঙ্কা।
তৃণমূলের সদস্যদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের ২১ টা সংসদ রয়েছে। অথচ প্রধান প্রিয়াঙ্কা সূর তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ছাড়া আর কোনও সংসদে কাজ করেন না। তাঁদের কথার পাত্তা দেন না। সরকারি টাকায় কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু দলেরই কাউন্সিলররা বঞ্চিত হচ্ছেন। এলাকার উন্নয়ন থমকে আছে। প্রধান অন্যের দ্বারা পরিচালিত হয়ে দলেরই লোকের কথা শুনছেন না। বুধবার, এবিষয়ে ফয়সালার জন্য তৃণমূল সদস্য ও দলীয় কর্মীরা পঞ্চায়েত অফিসে জড়ো হন। শুরু হয় হই হট্টগোল। পঞ্চায়েতের ভিতরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও ওঠে। কিন্তু পঞ্চায়েত থেকে বেরিয়ে চলে যান প্রধান। তাঁর দাবি, “ওরা আমাকে সরাতে চায়।”
এনিয়ে তৃণমূলের রাজহাট অঞ্চল সভাপতি রূপকুমার করের অভিযোগ, “প্রধান নিজের মর্জি মতো কাজ করছেন। আমাদের কথা শোনেন না। প্রধান কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা করেন না। নিজের যা মনে হয় তাই করেন।” তৃণমূল কর্মী সন্দীপ মালাকার একটি ছবি দেখিয়ে অভিযোগ করেন, “স্বামীর সঙ্গে বাড়িতে রাগ অভিমান হলে সেটা পঞ্চায়েত এসে মেটান প্রধান। কখনও দই খাইয়ে কখনও আইসক্রিম খাইয়ে রাগ ভাঙান। পঞ্চায়েতটা কাজের জায়গায। সেটাকে রোমান্সের জায়গা বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। আগে আমরা অনেক প্রধান দেখেছি কিন্তু এরকম দেখিনি। আমাদের দলীয় কর্মীদের সাথে কোনও রকম আলোচনা করেন না। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ওনার বুথে এবারে লোকসভা ভোটে আমরা হেরেছি। উনি বিজেপি দলের চর হয়ে গিয়েছেন। আমরা চাই প্রধান পদত্যাগ করুক।”
এদিকে, সমস্ত অভিযোগ নিয়ে রাজাহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রিয়াঙ্কা সুর বলেন,”কোনও সমস্যা হলে আমি সমাধান করার চেষ্টা করি না এটা যদি বলে থাকে তাহলে মিথ্যা বলছে। পঞ্চায়েতের সদস্যরা পঞ্চায়েতেই আসেন না। পঞ্চায়েতের কাজ এই সবে শুরু হয়েছে। ধাপে ধাপে বিভিন্ন সংসদে কাজ হবে। আমার পঞ্চায়েত লোকসভা ভোটে লিড দিয়েছে। ওরা চাইছে আমাকে কি করে সরানো যায়। আমাকে কেন সরাতে চাইছে সেটা বুঝতে পারছি না। বিধায়কের সঙ্গে সেরকম আদান-প্রদান আমার নেই। যেহেতু উনি আমাকে প্রধান করেননি,অন্য কাউকে সিলেক্ট করেছিলেন।” এখন এনিয়েই সরগরম হয়ে রয়েছে পোলবার রাহজাট গ্রাম পঞ্চায়েত।