টিউশন না পড়ায় ১১ পড়ুয়াকে ফেল করানোর অভিযোগ অধ্যাপকদের বিরুদ্ধে! উত্তেজনা কাটোয়া কলেজে
প্রতিদিন | ২৮ জুন ২০২৪
ধীমান রায়, কাটোয়া: পরীক্ষা দিয়েছিলেন ১৮ জন ছাত্রছাত্রী। তাঁদের মধ্যে ১১ জনই নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে ফেল করেছেন। এর নেপথ্যে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের তিন অধ্যাপকের হাত রয়েছে বলেই দাবি পড়ুয়াদের। অভিযোগ, ওই শিক্ষকদের কাছে টিউশন না পড়ার কারণেই এই কাণ্ড। যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ অভিযুক্ত অধ্যাপকরা।
কাটোয়া কলেজের অকৃতকার্য ছাত্রছাত্রীরা বলেন, “এখন নিয়ম অনুযায়ী ইন্টারনালের ১৫ নম্বর এবং হোম সেন্টারে প্র্যাকটিক্যালের ২০ নম্বর-সহ মোট ৩৫ নম্বর কলেজের হাতে থাকে। একটি পেপারে মোট মার্কস থাকে ৩৫ এবং বাইরের সেন্টারে থিওরির ৪০ নম্বর-সহ মোট ৭৫ নম্বর থাকে। এই ৭৫ নম্বরের মধ্যে কেউ ২৬ পেলেই সে ওই বিষয়ে পাশ করে যায়।” ছাত্রছাত্রীদের যুক্তি, “থিওরিতে শূন্য পেলেও কলেজের হাতে যে ৩৫ নম্বর থাকে তার মধ্যে ২৬ পেলেই পাশ করা যায়। কিন্তু কলেজের হাতে নম্বর থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানো হয়েছে।” কিন্তু কেন? ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, প্রতিহিংসার বশে ফেল করানো হয়েছে। কারণ, অনুত্তীর্ণ পড়ুয়ারা ওই বিভাগের অধ্যাপকদের কাছে টিউশন পড়েন না। এ বিষয়ে অধ্যক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছেন পড়ুয়ারা। অভিযোগপত্রে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের দুই শিক্ষিকা এবং একজন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, একজন শিক্ষিকা বাড়িতে টিউশন পড়ান। তাঁর সঙ্গে আরও দুজন যুক্ত। ছাত্রছাত্রীদের আগেই হুমকি দেওয়া হত যে তাঁদের কাছে টিউশন না পড়লে ফেল করিয়ে দেওয়া হবে।
যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে কৌশিক সরকার বলেন, “আমি বাড়িতে টিউশন পড়াই না। যখন খুশি আমার বাড়িতে এসে যে কেউ দেখতে পারেন।” পাশাপাশি অভিযোগ প্রসঙ্গে কৌশিকবাবুর সন্দেহ, “এমনও হতে পারে এমন কেউ টিউশন পড়ান, অথচ তাঁর ছাত্রছাত্রীরা ফেল করেছে। আবার সেই শিক্ষক বা শিক্ষিকা অকৃতকার্যদের এই পরামর্শ দিয়েছেন যাতে কলেজকে চাপ দিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়া যায়।”
তবে কলেজের ওই অকৃতকার্য পড়ুয়াদের অভিযোগ প্রসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু সরকার বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী কলেজ চলাকালীন সময়ে কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা টিউশন পড়াতে পারেন না। এমন ঘটলে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে তাহলে পুলিশের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে ছাত্রছাত্রীরা এখন অভিযোগ তুলছেন তারা তো আমার কাছে আগেই অভিযোগ করতে পারতেন। আমি নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নিতাম।” পাশাপাশি অধ্যক্ষের আশ্বাস, “কলেজের দুটি নির্দিষ্ট কমিটি রয়েছে। যারা এই ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখে। ওই ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।”