দুই নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথ নিয়ে টালবাহানা অব্যাহত। শপথ সংকট মেটাতে রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে ফোন করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মাঝেই রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে কেন শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। অভিযোগ, নাছোড়বান্দা মনোভাব নিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন পালটা প্রতিক্রিয়া দেওয়া হল রাজভবনের তরফে।তৃণমূলের দুই সদ্যনির্বাচিত বিধায়ক রায়াত হোসেন সরকার এবং সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ নিয়ে কয়েক দিন ধরেই সমস্যা চলছে। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘আমার বিধায়কেরা এক মাস ধরে বসে আছেন। মানুষ নির্বাচন করেছে। ওঁর কী অধিকার আছে?’ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজভবনে যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি চলছে, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আমাকে।’
এদিকে, রাজ্য বিধানসভায় দুই নবনির্বাচিত বিধায়ক শপথ নিতে চাইলেও সেই প্রকিয়া এখনও ত্বরান্বিত হয়নি। এদিকে, রাজভবনের তরফে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, নতুন বিধায়কেরা রাজভবনে যে পত্র দিয়েছেন, তাতে তাঁদের রাজভবনে আসতে না-চাওয়া নিয়ে কোনও বক্তব্য ছিল না। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধিতা করা হয় রাজভবনের বিবৃতিতে।
ঘটনাপ্রবাহ অনুযায়ী, গত ২১ জুন দুই বিধায়ককে জানানো হয় যে, ২৬ জুন দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজভবনে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যদিও, ২৪ জুন রাজ্যপালকে সায়ন্তিকা জানান, বিধানসভার স্পিকারের সামনেই তিনি শপথ নিতে চান। ২৫ জুন রাজভবনের তরফে সায়ন্তিকাকে জানানো হয় যে, সাংবিধানিক নিয়ম মেনে রাজ্যপালের সামনেই শপথ নেওয়া প্রয়োজন রয়েছে। এরপর সায়ন্তিকা ফের রাজ্যপালের কাছে সিদ্ধান্ত বদলানোর জন্য অনুরোধ করেন। চিঠিতে অনুচ্ছেদ ১৮৮-র উল্লেখ করে বিধানসভায় শপথ অনুষ্ঠান চান সায়ন্তিকা ও রায়াত হোসেন সরকার।
গতক্লাই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘উনি তো স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারকে মনোনীত করবেন। না হলে নিজে বিধানসভায় যাবেন।’ কিন্তু, বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপাল এখনও কোনও ব্যবস্থা নেননি। এদিকে, রাজ্যপাল তথা বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের দ্বারস্থ হয়েছেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘একবগ্গা’ মনোভাবের জন্য বিধায়করা শপথ নিতে পারছেন না। তাঁরা নিজেদের এলাকায় কাজ শুরু করতে পারছেন না। সেই কারণেই মতামত গ্রহণের জন্য প্রাক্তন রাজ্যপালের সঙ্গে যোগযোগ করেন বিধানসভার স্পিকার। বিধানসভায় দুই বিধায়ক এখনও ধরনা চলছে।