গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে গণপিটুনির খবর সামনে আসছিল। এবার বৌবাজারের হস্টেলে গণপিটুনির ঘটনায় শোরগোল। অভিযোগ, মোবাইল চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে মারধর করা হয়। মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তির নাম ইরশাদ। তাঁর বয়স ৪৭ বছর। চাঁদনি চক এলাকাতে তিনি একটি দোকানে কাজ করতেন। টিভি সারাইয়ের দোকানের কর্মী ছিলেন তিনি।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার উদয়ন হস্টেলের এক ছাত্রের মোবাইল চুরি হয়েছিল। ঘটনায় থানায় দায়ের করা হয় অভিযোগ। শুক্রবার ওই হস্টেলের পাশের একটি দোকানদার জানান, ইরশাদকে বারবার উদ্দেশ্যহীনভাবে এলাকাতে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। অভিযোগ, এরপরেই ওই ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যায় ছাত্ররা। তাঁকে মারধরের অভিযোগও উঠেছে।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বৌবাজার থানার পুলিশ। অভিযোগ, পুলিশ হস্টেলে প্রবেশ করতে চাইলেও তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু, পরে ইরশাদকে নামিয়ে আনা হয়। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু, সেখানে চিকিৎসক ওই ব্যক্তিটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় ১৪ থেকে ১৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুজেট সংগ্রহ করা যায় কিনা, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গণপিটুনির ঘটনা সামনে আসছিল। বাচ্চা চুরির গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্নভাবে। এরপর অশোকনগর, খড়দাতে বাচ্চা চোর সন্দেহে কয়েকজন গণপিটুনির শিকার হন। অশোকনগরে এক মহিলাকে গণপিটুনি দেওয়া হয় ছেলেধরা সন্দেহে। বনগাঁয় এক ভবঘুরেকে ছেলেধরা সন্দেহে বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে এবং হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই ব্যক্তি এখনও হাসপাতালে ভর্তি, জানা গিয়েছে এমনটাই।
শহরতলীতে একের পর এক এই ধরনের ঘটনা চিন্তা বাড়াচ্ছিল। সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য পুলিশি পদক্ষেপও করা হচ্ছিল। এরই মধ্যে খাস কলকাতায় ইরশাদের মৃত্যু চিন্তা বাড়াচ্ছে। জানা গিয়েছে, ইরশাদের স্ত্রী ইতিমধ্যেই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আর এর ভিত্তিতেই তদন্তে নেমেছে পুলিশ। ঠিক কী ঘটেছিল? ঘটনার নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছেন? সেই যাবতীয় বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায় কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেই বিষয়টিও।