• ‘বিচারকরা মানুষের সেবক’, সংবিধান নিয়ে বিশেষ বার্তা দেশের প্রধান বিচারপতির
    এই সময় | ২৯ জুন ২০২৪
  • ‘বিচারকরা মানুষ এবং সংবিধানের সেবক। বিচারকরা মানুষের সম্বন্ধে আগেভাগে কোনও ধারণা তৈরি করে বিচার করেন না… তাঁদের দেবতা ভাবাটা ঠিক নয়’ – কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে এসে এই বার্তাই দিলেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের বার লাইব্রেরির দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। সেই অনুষ্ঠান থেকে দেশের প্রধান বিচারপতি বার্তা দেন, মানুষ আদালতকে মানুষ ন্যায় এবং বিচারের মন্দির। তিনি বলেন, ‘ আমরা নিজেদের সেই মন্দিরের দেবতা ভেবে ভুল করি। তবে এটা খুব বিপদের। আমার সামনে আদালতকে মন্দির বললে বাধা দিই।’

    তাঁর কথায়, বিচারালয়কে মন্দির বললেই বিচারকরা দেবতা হয়ে যান। কিন্তু, বিচারকরা সংবিধান এবং মানুষের সেবক। সামনে যাঁরা দাঁড়িয়ে থাকেন বিচারের আশায় তাঁদের প্রতি সহানুভূতি রেখে আমাদের বিচার করা উচিত। বিচার ব্যবস্থায় একাধিক ভাষা ব্যবহারের বিষয় নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে বর্তমানে বিভিন্ন রায় দেশের একাধিক আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। সাংবিধানিক নৈতিকতা অনুযায়ী বৈচিত্র্য গ্রহণ করে সহনশীল হওয়ার বার্তাও উঠে আসে তাঁর বক্তৃতায়।

    পাশাপাশি, দেশের সংবিধান প্রতিটি মানুষের সমানাধিকারের কথাও তুলে ধরে বলে জানান প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তাঁর কথায়, ‘সাংবিধানিক নৈতিকতা বলছে, এক জন ভারতীয় যেমন চায় তেমন ভাবতে পারে, যেরকম চায় বলতে পারে, যাকে চায় তাঁকে পুজো করতে পারে, যাকে অনুসরণ করতে চাই করতে পারে। যা চায় খেতে পারে, যাকে চায় বিয়ে করতে পারে।’ সংবিধান কোনও কিছুতেই মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে না বলেও বার্তা দেন তিনি।

    এদিনের এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। তিনিও এই অনুষ্ঠান থেকে আইন ও সংবিধান নিয়ে বিশেষ বার্তা দেন। কলকাতা হাইকোর্ট যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিচার ব্যবস্থার কী ভাবে উন্নতি ঘটিয়েছে, সেই কথা তুলে ধরেন তিনি। বিচারপতি শিবজ্ঞানম বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্ট ঐতিহ্য ধরে রেখে নিজেকে পরিবর্তন করেছে। বিচারব্যবস্থা ঠিক রাখতে কলকাতা হাইকোর্ট কাজ করে চলেছে অবিরত।’ কোভিডের সময় নানা বাধা থাকা সত্বেও কী ভাবে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে কথাও তুলে ধরেন তিনি।
  • Link to this news (এই সময়)