শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের বার লাইব্রেরির দ্বিশতবর্ষের জন্য আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমও।সম্প্রতি সময়ে বিচারব্যবস্থার একাংশ নিয়ে উল্লেখযোগ্য মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সার্বিক প্রেক্ষাপটে এদিনের অনুষ্ঠান থেকে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া বার্তা যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, মনে করা হচ্ছিল এমনটাই।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম বলেন, 'বিচারব্যবস্থা যাতে সঠিক ভাবে পরিচালিত হয় সেই লক্ষ্যে অবিরত কাজ করে চলেছে কলকাতা হাইকোর্ট।' এছাড়াও কলকাতা হাইকোর্টের বিভিন্ন কাজের খতিয়ান তুলে ধরেছেন তিনি।
এদিন বক্তব্য রাখতে উঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বিচারপতি চন্দ্রচূড় অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাঁর বাবাও বিচার ব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। আমি নিজেও আইন জগতের মানুষ। তিন থেকে চারটি মামলা লড়েছি। এখনও আমি বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, 'মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, গির্জার মতো আমার কাছে বিচারব্যবস্থাও পবিত্র। কোনও মানুষের জীবনে সমস্যা নেমে এলে মানুষ বিশ্বাস করে দেশের বিচারব্যবস্থার উপর। দেশের বিচারব্যবস্থাকে উন্নত করার জন্য ৭০ একর জমি দিয়েছি। রাজারহাটে যাতে নতুন হাইকোর্ট করা যায় সেই জন্য জায়গা দিয়েছি। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বিচারব্যবস্থার উন্নতিতে সাহায্য করছেন।'
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখযোগ্য মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, 'বিচার ব্যবস্থায় কোনও রকমের রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব যেন না থাকে। কাউকে আঘাত করা আমার উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু, বিচারব্যবস্থার হতে হবে শুদ্ধ। সততা বজায় থাকা উচিত।' এছাড়াও গোপনীয়তা বজায় রাখা উচিত বলেও মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, 'মানুষ বলেন আদালত ন্যায় এবং বিচারের মন্দির। আমরা নিজেদেরকে সেই মন্দিরের দেবতা ভাবলে ভুল করি। আমাদের প্রত্যেকের নিজ নিজ চিন্তা রয়েছে। আমার মতে বিচারকরা সাধারণ মানুষের সেবক। বিচারকরা বিচার করুন। তবে আগে থেকেই অন্য কারও সম্পর্কে কোনও নির্দিষ্ট ধারণা তৈরি করে নেবেন না। যাঁরা আমাদের সামনে বিচারের জন্য দাঁড়ান তাঁরা যে মানুষ একথা মনে রাখতে হবে।’