এই সময়: শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত ২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ অংশে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর রেক চালানোর পথে বড় সাফল্য মিলল। ভূগর্ভে পূর্ব ও পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গের মধ্যে আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য যে ‘ক্রস প্যাসেজ’ তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল, তার শেষটিও তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।জরুরি অবস্থায় পড়লে যাত্রীদের যাতে এক সুড়ঙ্গ থেকে অন্য সুড়ঙ্গে নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য প্রতি ২৫০ মিটার অন্তর দুই সুড়ঙ্গের মধ্যে একটি করে সংযোগকারী পথ বা ‘ক্রস প্যাসেজ’ তৈরি করা হচ্ছে। শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত অংশে ভূগর্ভস্থ মাটির প্রকৃতির জন্য অতীতে ক্রস প্যাসেজ তৈরিতে বারবার বিপত্তি ঘটেছে। কাজও বন্ধ করতে হয়েছে। অবশেষে তা শেষ করা গেল।
জোড়া সুড়ঙ্গের কাজ প্রায় শেষ হলেও শিয়ালদহ-এসপ্ল্যানেড অংশে মেট্রোর রেক চালানো যায়নি। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর রেক হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড এবং শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ৫ পর্যন্ত অংশে চলছে। কিন্তু হাওড়া ময়দান থেকে সরাসরি সল্টলেক সেক্টর-ফাইভ পর্যন্ত ১৬.৬ কিলোমিটার অংশে নিরবচ্ছিন্ন রেক চললে একদিকে যেমন যাত্রীদের বিপুল সুবিধে, তেমনই যাত্রী-সংখ্যাও অনেকটা বাড়বে বলে আশাবাদী মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
সে কাজে বাধ সেধেছিল বউবাজার এলাকার মাটির প্রকৃতি। ২০১৯-এর ৩১ অগস্ট থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত বউবাজার চত্বরে তিনবার ধস নেমেছে মেট্রোর সুড়ঙ্গে। গত প্রায় এক বছর ধরে ওই এলাকায় ক্রস প্যাসেজ তৈরি নিয়েও কম নাজেহাল হয়নি নির্মাণকারী সংস্থা।
মাস দুই আগেই এপ্রিলের মাঝামাঝি ক্রস প্যাসেজ তৈরির সময়ে হিন্দ সিনেমার কাছে মাটির নীচে জল চুঁইয়ে পড়তে শুরু করলে বিপদ বুঝে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে তিন দিন গ্রাউটিং করে মাটি কিছুটা শক্ত হওয়ার পর নতুন করে কাজ শুরু হয়।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মাণে আন্তর্জাতিক অনুদান থাকায় প্রকল্পের প্রতিটি ধাপই আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে তৈরি করতে হয়েছে। তাই কোনও ক্রস প্যাসেজই বাদ দেওয়ার পরিস্থিতি ছিল না। আনুষঙ্গিক নির্মাণের কাজ শেষ করে এ বার শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেডের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর রেক চলাচল সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে।