• উচ্ছেদের ছায়ায় ঢাকা পড়েছে কি জঞ্জাল সাফাই
    আনন্দবাজার | ২৯ জুন ২০২৪
  • রাজ্যের সমস্ত পুরসভার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরকারি জায়গায় অবৈধ নির্মাণ ও দখলদারি উচ্ছেদের কাজে হাত লাগিয়েছে সিউড়ি পুরসভাও। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতার নিরিখে সিউড়ির স্থান একেবারে শেষের দিকে। এর পরেও সেই বিষয়ে বিশেষ নজর নেই পুরসভার বলে অভিযোগ তুলেছেন শহরবাসীর একাংশ।

    মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরে বেশ কিছুদিন কাটলেও সিউড়ি শহরের বিভিন্ন জায়গায় এখনও জমে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। রাস্তার ধারে ধারে, বিশেষত বাজার এলাকায় নানা ধরনের প্লাস্টিক-সহ অন্যান্য বর্জ্য ছড়িয়ে রয়েছে। শহরের বড় বড় নর্দমাগুলিও এক প্রকার বুজে গিয়েছে আবর্জনায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই পুরসভার তরফ থেকে সাফাই অভিযান শুরু করা হলেও, এখন উচ্ছেদ নিয়ে পুরসভাযতটা চিন্তিত পরিছন্নতা নিয়ে ততটা নয়। রাস্তা ও নর্দমা পরিষ্কার এর পাশাপাশি পাড়ায় পাড়ায় ভ্যাটের ব্যবস্থা করারও দাবি উঠছে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে।

    দিন কয়েক আগে রাজ্যের সমস্ত পুরসভার পুরপ্রধান ও এগজিকিউটিভ অফিসারদের নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিছন্নতার নিরিখে পুরসভাগুলির যে তালিকা মুখ্যমন্ত্রী তুলে ধরেন, সেখানে খারাপের তালিকায় নাম ছিল সিউড়ির। এই ঘোষণার পরেই পরিচ্ছন্নতা নিয়ে বিশেষ পদক্ষেপের কথা জানিয়েছিলেন পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। কেন শহর পরিচ্ছন্ন থাকছে না, তা নিয়ে সিউড়ি পুরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর সুব্রত চক্রবর্তীর কাছে কারণও জানতে চাওয়া হয়। সিউড়ি সদর হাসপাতাল চত্বর, বাসস্ট্যান্ড-সহ একাধিক জায়গায় জমে থাকা আবর্জনা পরিষ্কারও করা হয়। তার পর থেকে রাজ্যের অন্যান্য পুরসভার মতো উচ্ছেদ অভিযানকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে সিউড়ি পুরসভা। জঞ্জাল সাফাই চলে গিয়েছে পিছনের সারিতে।

    শহরের বাসিন্দা দেবব্রত ঘোষ, সুস্মিতা সরকার, আসিফ আখতাররা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সিউড়ি শহরকে নিয়ে যা বলেছিলেন, তা মোটেও ভুল নয়। এখানে নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার করা হয় না। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে ভেবেছিলাম পরিস্থিতির বদল হবে। কাজও শুরু হয়েছিল। আবারও একই পরিস্থিতি।” তাঁদের অভিযোগ, পাড়ায় পাড়ায় আবর্জনা সংগ্রহের জন্য পুরসভার যে গাড়ি এলেও তা নিয়মিত নয়। তাই নিয়মিত আবর্জনার গাড়ি আসার পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তত ২-৩টি করে ভ্যাটের ব্যবস্থা করা এবং সেগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

    পুরপ্রধান বলেন, “শুক্রবারই আমরা সমস্ত পুর-প্রতিনিধি এবং পুরকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছি। প্রত্যেককে জানানো হয়েছে, নিয়মিত এলাকা পরিষ্কার না হলে পরিষ্কারের দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজার এবং স্থানীয় পুর-প্রতিনিধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক মাসের মধ্যে শহরের কোথাও আবর্জনা জমে থাকলে স্যানিটারি ইনস্পেক্টরের বিরুদ্ধেও সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ করা হবে।” পুরপ্রধান জানান, অনেক ক্ষেত্রেই আবর্জনা সংগ্রহ করার গাড়ি চলে যাওয়ার পরে বাসিন্দারা রাস্তার ধারে আবর্জনা ফেলে দিচ্ছেন। এই কাজও বন্ধ করতে হবে। প্রতিটি শপিং মল বা বড় দোকানের জন্য আলাদা ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার বাইরে কেউ আবর্জনা ফেললে তাকেও জরিমানার মুখে পড়তে হবে৷

  • Link to this news (আনন্দবাজার)