• ফুটপাতে দোকান নয়, হুঁশিয়ারি
    আনন্দবাজার | ২৯ জুন ২০২৪
  • ফুটপাত দখল করে দোকান চালানো যাবে না। আগেও এ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এ বারে সরাসরি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিল পুরুলিয়া পুরসভা।

    ফুটপাত দখল সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়া থেকে ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যমে ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি। তার পরে শুক্রবার স্টেশন বাজারের রাস্তায় ফুটপাত কতটা দখল হয়েছে, নজরদারিতে নামেন পুরপ্রধান।

    স্টেশন বাজারের এই রাস্তাই শহর থেকে পুরুলিয়া রেলস্টেশনে পৌঁছনোর অন্যতম প্রধান রাস্তা। স্টেশন থেকে বেরোনোর ঠিক মুখে এই রাস্তায় প্রায় সময়ই যানজট লেগে থাকে। শুধু শহরবাসী নন, পর্যটকদের কাছ থেকেও প্রতিনিয়ত অভিযোগ ওঠে। এ দিন সকালে পুরপ্রধান ও পুরকর্মীরা স্টেশন বাজারে হাজির হন। স্টেশন থেকে বেরোনোর ঠিক মুখে রাস্তার দু’দিকের ফুটপাতই ব্যবসায়ীদের দখলে চলে গিয়েছে দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন পুরপ্রধান। ফুটপাতের সমস্ত জায়গা-সহ রাস্তার সামনের অংশও দখল করে নিলে মানুষ হাঁটাচলা করবেনকী ভাবে, ওই ব্যবসায়ীদের কাছে জানতে চান তিনি।

    স্টেশন বাজারে পুরসভার একটি বাজার রয়েছে। বাজারের ভেতরে দোকানের সামনে বারান্দার বেশির ভাগই এক ব্যবসায়ীর দখলে চলে গিয়েছে দেখে নবেন্দু ওই ব্যবসায়ীর কাছে তার কারণ জানতে চান। তাঁর কথায়, “এই পরিসরটুকু তো বাজারের ভিতরে আসা মানুষজনের চলাফেরার জায়গা। কেউ দোকান ভাগ করে ফুটপাতের অংশ দখল নিয়েছেন, তো কেউ ফুটপাতের উপরেই খাবারের দোকান দিয়েছেন। কেউ বা আবর্জনা ফেলার ডাস্টবিনের জায়গা দখল করে ব্যবসা শুরু করেছেন। এ ভাবে তো চলতে পারে না।” এক ব্যবসায়ী দোকানের শাটারের বাইরের অংশে শেড তৈরি করে ফুটপাতের দখল নিয়েছেন দেখে পুরপ্রধান দ্রুত তা সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, রাস্তার দু’পাশের দোকানদারদের সতর্ক করে পুরপ্রধান বলেন, “এক বছর আগে এসে আপনাদের সতর্ক করে গিয়েছিলাম যে, ফুটপাত ছেড়ে দিন। কিন্তু আপনাদের প্রায় কেউই সে কথা কানে তোলেননি। এ বার রাজ্য সরকারের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে যে, ফুটপাত দখলমুক্ত করতে হবে। শেষ বারের মতো সতর্ক করে দিয়ে যাচ্ছি। এ বারে গ্যাস-কার্টার বা জেসিবি নিয়েই আমরা অ্যাকশনে নামব।”

    স্টেশনের বাইরে ওই বাজারের অদূরে রাধাকৃষ্ণ মোড়গামী রাস্তার উপরেই টোটো স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। তা-ও ওই রাস্তায় যানজটের কারণ বলে অভিযোগ ওঠে প্রায়শই। এ দিন রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকা টোটোগুলিকে সরিয়ে লাগোয়া ডাকবাংলো মাঠে দাঁড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে পুরপ্রধান বলেন, “এই রাস্তাটি স্টেশনগামী শহরের অন্যতম প্রধান রাস্তা। কিন্তু রাস্তার দু’পাশের ব্যবসায়ীরা ফুটপাত দখল করে নেওয়ায় যানজট লেগেই রয়েছে। এ নিয়ে নানা তরফে আমাদের কাছে একাধিক বার অভিযোগ পৌঁছেছে।” তাঁর সংযোজন, “আমরা এক বছর আগে যে কাজ শুরু করেছিলাম, আজ মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তাকেই স্বীকৃতি দিয়েছেন। ফুটপাত দখল হলে কোনও আপস নয়। ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যত দ্রুত সম্ভব ফুটপাত দখলমুক্ত করতে হবে। না হলে পুরসভাই অ্যাকশনে নামবে।”

    আগামী দিনে শহরের কোন কোন এলাকা দখলমুক্ত করা হবে, সে প্রশ্নের উত্তরে পুরপ্রধান বলেন, “পুরসভার নিজস্ব বাজার থেকে আমরা শুরু করলাম। এর পরে চকবাজার, ট্যাক্সিস্ট্যান্ড, রণছোড় গলি, কাপড়গলি, পিএন ঘোষ স্ট্রিট-সহ শহরের বিভিন্ন রাস্তার ফুটপাতই দখলমুক্ত করা হবে।”

  • Link to this news (আনন্দবাজার)