কৃষ্ণনগর পুরসভা এলাকায় টানা তিন দিনের লাগাতার প্রচার চালিয়েছিল। সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শনিবার সেই সময়সীমা পার হয়েছে। তাই রাস্তার ধারে একের পর এক দোকান উচ্ছেদ অভিযানে জেলা প্রশাসন। যদিও তিনি যে বুলডোজ়ার ‘নীতি’তে বিশ্বাসী নন, সেটা বোঝাতে এক মাস আর কোনও উচ্ছেদ হবে না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এই সময়ের মধ্যে ‘সার্ভে’ চালিয়ে সব কিছু ঠিক করে নিতে হবে বলে নির্দেশ দেন তিনি। হকারদের জন্য এবং গাড়ি পার্কিংয়ের আলাদা জ়োন তৈরি করতে একটি কমিটিও গঠন করেছেন তিনি। মমতার কথায়, ‘‘প্রথমে বসাবেন, তার পর বুলডোজ়ার দিয়ে তুলবেন, হবে না।’’
শুক্রবার বিকেলে জেলা ও পুর প্রশাসনের কর্তাদের যৌথ বৈঠকে ফুটপাত দখল মুক্ত করার রূপরেখা চূড়ান্ত হয়। শনিবার সাত সকালে বুলডোজ়ার নামিয়ে একের পর এক অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে প্রশাসন। নদিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, শনিবার সকাল থেকেই বুলডোজ়ার নিয়ে বেআইনি দখল মুক্ত করার কাজ চালাতে শুরু করেছে পুরসভা এবং জেলা প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে জেলাশাসকের দফতরের উল্টো দিকের রাস্তায় অভিযান শুরু হলেও পরে পোস্ট অফিসের মোড়, সদরের মোড়, নতুন এবং পুরনো বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, বেলেডাঙা মোড়, এভি স্কুল মোড়-সহ শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলি দখল মুক্ত করা হচ্ছে। এই অভিযান নিয়ে নদিয়া জেলার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ অনুসারে কাজ করা হচ্ছে। উচ্ছেদ হওয়া হকারদের পুনর্বাসনের ব্যাপারেও প্রশাসন চিন্তাভাবনা করছে।’’ আর এ নিয়ে কৃষ্ণনগর পৌরসভার চেয়ারম্যান রীতা দাস বলেন, ‘‘শহরের সমস্ত ফুটপাত দখল হয়ে থাকবে, এটা তো হতে পারে না। হকারদের স্বার্থের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের চলাচলের ন্যূনতম ব্যবস্থাও রাখতে হবে। অনুরোধ করার পরেও যাঁরা সরেননি, তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হবে।’’
হকার উচ্ছেদ নিয়ে সরকার এবং পৌর প্রশাসনকে আক্রমণ করেছে বিরোধীরা। কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভোটের সময় হকারদের মিছিল ভরাতে ব্যবহার করে তৃণমূল। কিন্তু, ওদের সঙ্গে না-থাকলে দোকান তুলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। হকারদের ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলা হচ্ছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মানুষের চলাচলের রাস্তার যেমন দরকার, তেমনই যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে ফুটপাতের উপর নির্ভর করে পেট চালাচ্ছেন, তাঁদের পুনর্বাসনও সরকারকেই দেখতে হবে।’’
প্রশাসক হিসেবে পুলিশ এবং প্রশাসনকে যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সরকারি জমি বেদখলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে বলেছেন। পাশাপাশি, তাঁর পরামর্শ, ‘‘কারও পেটের ভাত কেড়ে নেওয়ার অধিকার আমাদের নেই। কাউকে বেকার করে দেওয়ার অধিকার আমাদের নেই।’’