এই আবহে শুক্রবার থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। বৈঠকের শুরুতেই সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি তাঁর প্রারম্ভিক বক্তৃতা করেন। সেই বৈঠকে তিনি গোটা দেশে সিপিএমের ফল, বিশেষ করে কেরল এবং বাংলায় সিপিএমের ভারডুবি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সিপিএম সূত্রে খবর, দলের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কেরল। সে রাজ্যে সিপিএম ক্ষমতাশীল।
কেরলের রেওয়াজ হল পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলানো। কিন্তু সেখানে ব্যতিক্রম ঘটেছিল ২০২১ সালে। রীতি ভেঙে পর পর দু’বার ক্ষমতায় আসে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বাম গণতান্ত্রিক জোট সরকার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামেরা যা ভোট পেয়েছিল, ২০২৪ সালে তার থেকে প্রায় ১০ শতাংশ ভোট কমে গিয়েছে তাদের। এই তিন বছরে ১০ শতাংশ ভোট কমে যাওয়া রাজনৈতিক ভাবে খুবই ‘বিপজ্জনক’ বলে মনে করছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। শুক্রবার সীতারাম তাঁর বক্তৃতায় সেই প্রসঙ্গই উত্থাপন করেছেন। বাংলায় সিপিএমের শোচনীয় পরিণতি সম্পর্কেও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন একই সঙ্গে।
কেরলে নতুন করে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে বিজেপি। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে সেখানে একটি আসনও জিতেছে তারা। সিপিএম সূত্রে খবর, এ প্রসঙ্গে সীতারাম উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “বিজেপি কী ভাবে কেরলে মাথা তুলছে? সিপিএমের ভোট কি তারা কেটে নিচ্ছে?” তাঁর সংযোজন, “কেরলে ভোটের ফলাফল নিয়ে নিবিড় ভাবে পর্যালোচনা করতে হবে।”
উল্লেখ্য, বাংলায় সিপিএমের এই দুর্দশার নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি। সিপিএমের একটি বিশাল ভোট বিজেপির দিকে চলে গিয়েছে বলে মনে করেন রাজনীতির কারবারিরা। কেরলেও সেই প্রবণতা দেখা দিচ্ছে কি না, তা যাচাই করে দেখতে চাইছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। সূত্রের খবর, বাংলা থেকে যাঁরা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, তাঁদের আধিকাংশই আলোচনা করবেন শনিবার। তবে এই পর্যালোচনার ক্ষেত্রে নিচুতলার কর্মীদের উপরে কিছু চাপিয়ে দেওয়ায় পক্ষপাতী নয় সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি।
সীতারাম বলেন, “দলে অবশ্যই স্বাধীন মতামত উঠে আসুক। এবং সেই মতামতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।” অন্য দিকে, বাংলায় সিপিএমের ফল নিয়ে শনিবার বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।