• গ্রামের মানুষকে বইমুখী করতে অভিনব উদ্যোগ নিল মুর্শিদাবাদের একটি স্কুল...
    আজকাল | ২৯ জুন ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে শিক্ষার হার বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে তাদেরকে সচেতন করতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গা চক্রের ৩০ নং আণ্ডিরণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র–ছাত্রীরা। এলাকার মানুষকে বইমুখী করা, নতুন প্রজন্মের ছাত্র–ছাত্রীদের মধ্যে মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্তি দূর করা, খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো এবং বিভিন্ন সামাজিক বিষয়ে সকলকে সচেতন করতে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা প্রতি ১৫ দিন অন্তর গ্রামে ভ্রাম্যমান ‘‌কিশোর’‌ গ্রন্থাগার নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। 

    ২০১৯ সাল থেকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ দত্তের আগ্রহে শুরু হয়েছে এই ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগার। এই ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগারের প্রায় ৮০ জন সক্রিয় পাঠক রয়েছে। 

    বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‌বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ ক্রমশই ক্রমে যাচ্ছে। তাই গ্রামের সর্বসাধারণকে বইমুখী করার উদ্দেশে এই ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগার চালু করা হয়েছে। বর্তমানে এই ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগারে প্রায় ৮০০–র বেশি বই আছে।’‌ হরিহরপাড়ার একজন বিশিষ্ট শিক্ষক সহ আরও কয়েকজন ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগারের জন্য বই দিয়ে সাহায্য করেছেন। 

    আণ্ডিরণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগারে কবিতার বই থেকে শুরু করে কার্টুনের বই, বাচ্চাদের জন্য ভূতের বই এবং বয়স্কদের জন্য শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন লেখকের বহু বই রয়েছে। ১৫ দিন অন্তর পাঠকের কাছে বিভিন্ন বিষয়ের বই নিয়ে হাজির হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কচিকাঁচারা। 

    গ্রামে ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগার হাজির হওয়ার আগে মেঠো পথে বাজনা বাজিয়ে চলতে থাকে কয়েকজন। যাতে সেই আওয়াজ শুনে সাধারণ মানুষ জানতে পারেন গ্রামে হাজির হয়ে গেছে ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগার। তবে প্রখর রোদে যাতে ছাত্রছাত্রীরা ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগার নিয়ে বার না হয় সেই বিষয়টিও বিদ্যালয়ের তরফে লক্ষ্য রাখা হয়। 

    বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‌গ্রামাঞ্চলে এখনও বাল্যবিবাহ অত্যন্ত সাধারণ ঘটনা। ভ্রাম্যমান গ্রন্থাগার নিয়ে যখন গ্রামের পথে বার হই তখন ছাত্র–ছাত্রীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুগুলোকে তুলে ধরে। শনিবার যেমন স্কুলের দুই নাবালক ছাত্রছাত্রীকে বর–বউ সাজিয়ে গ্রামে বাল্যবিবাহ নামক কুপ্রথা এবং তার খারাপ দিকগুলো সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করেছি। বই পড়ার ফলে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে মানুষের কুসংস্কারও দূর হচ্ছে।’‌ 

    ‌এর পাশাপাশি স্কুলের মধ্যে ‘‌রিডিং রুম’‌ তৈরি করা হয়েছে। যাতে ছাত্র–ছাত্রীদের আরও বেশি করে বইমুখী করা যায়। এছাড়াও স্কুল থেকে পাশ করা প্রাক্তন ছাত্র–ছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে রেফারেন্স বই দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।  
  • Link to this news (আজকাল)