• ভোট পরবর্তী হিংসার নামে ভুয়ো মামলা, মামলাকারী কে দশহাজারের জরিমানার নির্দেশ 
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৯ জুন ২০২৪
  • মোল্লা জসিমউদ্দিন: গত বিধানসভার ভোট পরবর্তীর মতন এবারের লোকসভা নির্বাচন পরবর্তীতে রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে অসংখ্য মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সাধারণ আক্রান্ত মানুষরা রাজ্যের ডিজি কে ইমেইল করে অভিযোগদায়ের করতে পারেন। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শয়ে শয়ে অভিযোগ আসে। অভিযোগের বেশিরভাগই প্রতিষ্ঠা পায়।

    তবে অভিযোগের একাংশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মিথ্যা বলে জানা যায়।এহেন পেক্ষাপটে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ এনে মিথ্যা মামলা করায় অভিযোগকারীকে ভৎসনা এবং আর্থিক জরিমানার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা  ঘিরে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছিলেন এক ব্যক্তি। তার অভিযোগ ছিল, বিরোধী দলের কর্মী হওয়ায় রাজ্যের শাসক শিবিরের লোকজনের দ্বারা আক্রান্ত তিনি ও তার পরিবার।তাদের পরিবারকে তৃণমূল বাড়ি ছাড়া করেছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়।বেশ কিছুদিন ধরে মামলাটির শুনানি চলছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এদিকে ওই ব্যক্তির করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা তথ্য প্রমাণ দিয়ে রাজ্যের আইনজীবী আদালতে দেখান, -‘যারা অভিযোগ করেছেন তারা সকলেই বাড়িতে রয়েছেন’। মিথ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজ্য এর তরফে আরও জানানো হয়, -‘ দুই প্রতিবেশীর গোলমালকে ভোটে হিংসার ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করেছেন মামলাকারী।

    এর সাথে ভোট পরবর্তী হিংসার কোনো যোগই নেই’। পরে পরিস্থিতি বুঝতে পেরে আদালতে মামলা তুলে নেওয়ার আর্জি জানান ওই মামলাকারী। ওই ব্যক্তি বলেন -‘ তিনি মামলা তুলে নিতে চান।’যদিও প্রথমে অভিযোগকারীর আবেদনে সায় দেয়নি আদালত। মিথ্যে অভিযোগ তুলে মামলা করায় চরম ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। পরে অবশ্য মামলা তোলার অনুমতি দেন বিচারপতি। তবে মিথ্যা মামলা দায়ের করে কোর্টকে বিভ্রান্ত করা এবং আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য ১০০০০ হাজার টাকা জরিমানার বিনিময়ে মামলা তোলার অনুমতি দেয় হাইকোর্ট।জরিমানা হিসেবে পাওয়া ওই অর্থ কলকাতা হাইকোর্টের পুরনো বিল্ডিংয়ে মহিলা শৌচালয় নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ, -‘মামলাকারীর থেকে পাওয়া অর্থ রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিতে হবে। এরপর সেই টাকা মহিলা শৌচালয় নির্মাণ কাজে খরচ করতে হবে’। আদালতকে তার ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

    প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রিপোর্ট জমা করে রাজ্য সরকার।  কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দর ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট পেশ করে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানিয়েছিলেন, নির্বাচনী হিংসা সংক্রান্ত যে সমস্ত অভিযোগ ইমেল মারফত জমা পড়েছে তার মধ্যে শতাধিকই ভুয়ো, মিথ্যে। আর এবার হাতেনাতে সেই ভুয়ো মামলা ধরল হাইকোর্ট।রাজ্যের দিকে দিকে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগের তির রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে মামলাও হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।  ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে এই মিথ্যা মামলায় কড়া পদক্ষেপ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।

  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)