৩ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার এলাকায় রাস্তা দখল করে দীর্ঘসময় ধরে ব্যবসা করছেন অন্তত জনা পঞ্চাশেক ব্যবসায়ী। এই অভিযোগ বহু দিনের। ক্রমে ক্রমে দোকানগুলি উঠে এসেছে রাস্তার অনেকটা অংশেই। তার জেরে এলাকা এতই ঘিঞ্জি হয়ে পড়েছে যে রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স বা দমকলের গাড়ি ঢোকাইদুষ্কর হয়ে পড়ে।
সম্প্রতি বিভিন্ন পুরসভা এলাকায় রাস্তা দখল করে ব্যবসা চালানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশের পরেই নড়েচড়ে বসে রঘুনাথপুর পুরসভা। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই রাস্তা দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার পরেই মাইকে ঘোষণা করে শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে ওই সব দোকানদারদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় পুরসভা।
এ দিন দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দোকান নিজেরাই সরিয়ে নিতে উদ্যোগী নিয়েছেন কয়েক জন ব্যবসায়ী। তবে বেশির ভাগ দোকানই পুরোদমে চলছে। কাপড়ের দোকান সরিয়ে নিয়ে যাওয়া এক ব্যবসায়ী মিলন রজক বলেন,”পুরসভা দোকান সরাতে নির্দেশ দিয়েছে। তাই আপাতত দোকান সরিয়ে নিচ্ছি। তবে পুনর্বাসনের কোনও ব্যবস্থা পুরসভা করেনি।” এক জুতোর দোকানের মালিক সহদেব বাউরি বলেন,”পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে ব্যবসা। আগে বাবা দোকান চালাতেন। পুরসভা দোকান সরিয়ে নিতে বলেছে। কিন্তু পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে এ ভাবে দোকান সরানো হলে কোথায় যাব বুঝতে পারছি না।”
তবে ঘটনা হল, দোকান সরানোর নির্দেশ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। অনেকের দাবি, পুরসভা জানিয়েছে রাস্তা তৈরির কাজ হবে। তাই আপাতত দোকান সরিয়ে নিতে হবে। রাস্তার কাজ শেষ হলেই আবার সেখানেই বসবেন তাঁরা। পুরপ্রধানের তবে দাবি,”এ ধরনের কোনও কিছু ব্যবসায়ীদের জানানো হয়নি। তাঁদের স্পষ্ট জানানো হয়েছে, রাস্তা দখল করে ও নর্দমার উপরে বসা চলবে না।”
তবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ কতটা যুক্তিযুক্ত, প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। রঘুনাথপুর শহর কংগ্রেসের সভাপতি তারকনাথ পরামানিক বলেন, ”দীর্ঘ সময় ধরে নতুন বাজারে ব্যবসা করেছেন ওই ব্যবসায়ীরা। দোকানের ভরসাতেই সংসার চালান তাঁরা। কিন্তু পুরসভা কোনও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই উচ্ছেদ করে দিচ্ছে। এটা অমানবিক।” পুরপ্রধান তরণীর অবশ্য দাবি,”ব্যবসায়ীরাই তাঁদের জানিয়েছেন পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের পাশে স্টেট ব্যাঙ্কের অদূরে জামসোলে ফাঁকা জায়গায় তাঁরা দোকান করবেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী রাস্তা দখলমুক্ত করা হচ্ছে। পুরসভা পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে।”