শেখর চন্দ্র, আসানসোল: আদালত থেকে বেরিয়ে বিস্ফোরক মণীশ খুন ও বিরিয়ানি ব্যবসায়ীকে হুমকির মাস্টারমাইন্ড সুবোধ সিং। বললেন, “বাংলার পুলিশ অপদার্থ। নিজেরা ক্রাইম কন্ট্রোল করতে পারছে না। আমার উপর সব চাপাচ্ছে।” আগামী সোমবার ফের আদালতে তোলা হবে ধৃতকে।
২০২২ সালে রানিগঞ্জের স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুন্দর ভালোটিয়ার বাড়িতে ডাকাতি ও তাকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল ডাকাত দল। চলেছিল গুলির লড়াই। তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। ওই ঘটনায় ধৃত চার ডাকাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সুবোধের নাম উঠে আসে। ওই ঘটনার তদন্তে আসানসোলে আনা হয় মাস্টার মাইন্ড সুবোধ সিংকে। এদিকে গত ৯ জুন রানিগঞ্জ ডাকাতির ঘটনায় মোট ৫ জনকে ধরে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও সুবোধের সংযোগ পাওয়া গিয়েছে। মনীশ শুক্লা খুনেও নাম রয়েছে সুবোধের। আদালতের প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট নিয়ে তাকে বিহারের জেল থেকে এরাজ্যে আনার তোড়জোড় আগেই শুরু করেছিল সিআইডি। এরই মাঝে নয়া অভিযোগ।
ঠিক কী অভিযোগ? বেউর জেলের সেক্টর-৩-এর ওয়ার্ড নম্বর ২২-এর ঘাঁটিতে বসে ফের বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সম্পন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে ‘তোলা’ চেয়ে ফোন শুরু করেছিলেন সুবোধ। কখনও তার সহযোগী রমেশ সিং, কখনও সানয় সিং ফোন করতেন। শাগরেদরা বিহারের নম্বরের সিমকার্ড ব্যবহার করলেও, হুমকি ফোনের ক্ষেত্রে সুবোধ সিং পুরনো পন্থায় ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল (ভিওআইপি) পদ্ধতিই ব্যবহার করছে। কয়েকদিন আগে সেরকমই এক ভিওআইপি কলের (সাইপ্রাসের সার্ভার ব্যবহার করে) মাধ্যমে বারাকপুরের এক প্রতিষ্ঠিত বিরিয়ানি ব্যবসায়ীর পুত্র তথা তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যকে হুমকি দিয়ে ২০ লক্ষ টাকা তোলা দাবি করেন গ্যাংস্টার সুবোধ।
হুমকি ফোনের জেরে আতঙ্কিত গোটা ব্যবসায়ী মহল। কারণ ওই বিরিয়ানি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তোলা চেয়ে না মেলায়, গত ২০২২ সালের মে মাসে নিজের শ্যুটারদের দিয়ে গুলি চালিয়ে দুজনকে জখম করেছিল সুবোধ। ফের সেই ব্যবসায়ী পুত্রকে টার্গেট করে সুবোধ তোলা চেয়ে হুমকি দেওয়ায় ঘুম ছুটেছে পরিবারের। আতঙ্কিত ব্যবসায়ী পুত্র অনির্বাণ দাস ও পরিবারের লোকজন পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছেন। এসবের মাঝে এদিন আসানসোলে আদালতে সুবোধ সিংয়ের দাবি, তিনি ৬ বছর ধরে বন্দি। তা সত্ত্বেও বাংলার পুলিশ নিজেদের অপদার্থতা ঢাকতে বারবার তাঁদের দোষারোপ করে চলছে।