বচসার জেরে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ, পাণ্ডুয়ায় মৃত্যু যুবকের
এই সময় | ৩০ জুন ২০২৪
সামান্য বচসার জেরে রাস্তায় ফেলে মারধর, আর তাতেই যুবকের মৃত্যু অভিযোগ। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হুগলির পাণ্ডুয়ার দ্বারবাসিনী এলাকায়। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার দ্বারবাসিনীর গরুই গেড়ে গ্রামের বাসিন্দা আশিস বাউল দাস(২৬) বন্ধুদের সঙ্গে বিষহরিতলার মেলা দেখে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গমুকপাটি এলাকায় মনসা পুজোর মাইক বাজানো নিয়ে একটা গণ্ডগোল চলছিল। সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় আশিসের গায়ে ধাক্কা লাগে এক গ্রামবাসীর। সেই নিয়েই বচসা ও তর্কাতর্কি শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় আশিসকে বাইক থেকে কলার ধরে টেনে নামিয়ে মারধোর করা হয়। রাস্তায় ফেলে লাফি মারা হয় বুকে। বন্ধুরা তাঁকে কোনওভাবে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে। রাতে বুকে ব্যথা অনুভব করেন আশিষ। বাড়িতেও ঘটনার কথা জানান।
পরদিন আশিসের বাবা ওই গ্রামে গিয়ে কেন ছেলেকে মারা হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে তাঁর উপরেও চড়াও হয় অভিযক্তরা। এদিকে শুক্রবার রাতে রক্ত বমি শুরু হওয়ায় পাণ্ডুয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আশিসকে। সেখান থেকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। অবস্থা সংকটজনক থাকায় তাঁকে আইসিইউ-তে দিতে বলেন চিকিৎসক। কিন্তু আইসিইউ-তে ভর্তি করতে গেলে সেখানে ওয়েটিংয়ে থাকতে হয় আশিসের বাড়ির লোকেদের। এরপর আশিসের পরিবার তাঁকে কল্যাণীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে কয়েক ঘণ্টা থাকার পর ফের অবস্থার অবনতি হয়। এরপর কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। রবিবার চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয় তাঁর।
ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্তে নেমে লাল্টু বাউল দাস ও শুভঙ্কর বাউল দাস নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পাণ্ডুয়া থানার পুলিশ। হুগলি গ্রামীণের পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, 'মদ্যপ অবস্থায় গণ্ডগোল হয়েছিল। সেখান থেকে বচসার শুরু হয়। মারধর করা হয়। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে।'
এদিকে প্রিয়জনকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সকলেই। জানা গিয়েছে নিহত আশিসের স্ত্রী বর্তমানা সন্তানসম্ভবা। মোট ৬ জন মিলে আশিসকে মারধর করেছিল বলে অভিযোগ তাঁর বন্ধুদের। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানাচ্ছে আশিসের পরিবার।