• বহরমপুরে সরকারি জমি 'দখল' করে তৃণমূলের পার্টি অফিস তৈরির অভিযোগ, শুরু জোর বিতর্ক ...
    আজকাল | ০১ জুলাই ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্য জুড়ে সরকারি জমি দখলমুক্ত করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। গত কয়েকদিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ভেঙে দেওয়া হয়েছে ফুটপাত জুড়ে বা সরকারি জমি দখল করে গড়ে ওঠা একাধিক অবৈধ নির্মাণ।

    ঠিক সেই সময় প্রকাশ্যে এল আরও এক অদ্ভুত তথ্য। রাজ্যের শাসক দল, তৃণমূল কংগ্রেস, বহরমপুরে শহরে তাদের সাংগঠনিক জেলার ঝাঁ চকচকে যে অফিসটি তৈরি করেছেন তা কোনও অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই সরকারি জমিতে গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।

    যদিও মুখ্যমন্ত্রী সরকারি জমি জবরদখল হওয়া রুখতে ব্যবস্থা নেওয়ার পরই তৃণমূলের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে পূর্ত দপ্তরের সাথে কথা বলে জমি বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করা হবে।

    মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন- প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ মান্নান হোসেন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করার পর তাঁর উদ্যোগে বহরমপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র ঋত্বিক সদনের কাছে সরকারি জমিতে ছোট আকারে গড়ে উঠেছিল তৃণমূল দলের অফিস। তবে গত কয়েক বছরে দলের জেলা সভাপতি পরিবর্তনের সাথে সাথে আকার এবং আয়তনে বেড়েছে এই দলীয় অফিসটি।

    তৃণমূলের অপর এক নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন- বর্তমানে যেখানে দলের পার্টি অফিসটি রয়েছে আগে সেখানে পূর্ত দপ্তরের তরফ থেকে রাস্তা তৈরির জন্য ব্যবহৃত পিচের ড্রাম রাখা হত। তবে আকার এবং বহরে শাসক দলের অফিস বাড়তে থাকায় এখন আর সেখানে পিচের ড্রাম রাখা হয় না। পূর্ত দপ্তরের প্রায় তিন বিঘা জমি তৃণমূলের দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ।

    ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর স্বীকার করে নিয়েছেন বহরমপুরে তাদের প্রধান দলীয় অফিসটি সরকারি জমিতে অবস্থিত এবং এর জন্য কোনও দপ্তরের প্রয়োজনীয় অনুমোদন নেই। তিনি বলেন, 'আমার জানা নেই দলীয় অফিসটি তৈরির জন্য মুখ্যমন্ত্রী বা পূর্ত দপ্তর কোনও অনুমোদন দিয়েছে বলে। আমার মনে হয় নিয়ম সকলের জন্যই এক হওয়া উচিত। সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে আমরা দেখতে পেয়েছি কলকাতাতে সরকারি জমিতে অবস্থিত বিজেপি এবং তৃণমূলের দলীয় অফিস ভাঙা পড়েছে।'

    তবে হুমায়ুন বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী যে 'পলিসি' নিয়েছেন তাকে আমি সম্মান জানাই। তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সেই ব্যাপারে আমি কোনও মন্তব্য করব না।'

    যদিও জমি নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই দ্রুত তা মিটিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, 'আমাদের দলীয় অফিসটি পূর্ত দপ্তরের জমিতে অবস্থিত। ওদের সাথে আমরা দ্রুত একটি চুক্তি করছি এবং জায়গাটি আমরা নিয়ে নেব।'

    অন্যদিকে সরকারি জমি জবরদখল করে পার্টি অফিস নির্মাণের তীব্র সমালোচনা করেছেন বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র। তিনি বলেন, 'বহরমপুরের সমস্ত মানুষ, সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রী জানেন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারি জমি দখল করেই বহরমপুরে তাদের দলীয় অফিস তৈরি করেছে। এই বিষয় নিয়ে নতুন করে আমার আর কিছুই বলার নেই।'

    সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, 'বহরমপুরে তৃণমূলের পার্টি অফিসটি বেনিয়ম করেই গড়ে উঠেছে। আমাদের জানা নেই পূর্ত দপ্তরে এখনও পর্যন্ত ওই জমিতে তৃণমূল কংগ্রেসকে পার্টি অফিস নির্মাণের জন্য কোনও অনুমোদন দিয়েছে বলে।'

    তবে জামির মোল্লা জানিয়েছেন- বহরমপুরে সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের দলীয় অফিসটি সরকারি জমি 'লিজে' পাওয়ার পর সেখানে গড়ে উঠেছে।
  • Link to this news (আজকাল)