ভবানন্দ সিংহ: উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় এক যুবক ও যুবতীকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত জেসিবিকে আটক করল পুলিস। এলাকার এক যুগলের বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বসানো হয় সালিশি সভা। সেই সভায় ওই যুগলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনা হয়। তার পরই ওই যুগলকে মাটি ফেলে লাঠি দিয়ে নির্মম ভাবে মারধর করে জেসিবি ওরফে তাজেমুল। জেসিবির দাপটে এলাকায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলাও। শুক্রবার বিকেলে তাঁদের উপর ওই নৃশংশ অত্যাচারের পরে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যেতে পারেনি ওই যুবক-যুবতী। দু'জনকে আর্থিক জরিমানাও করা হয় বলে খবর। একজন মহিলাকে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে মারধরের ওই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ওই ভিডিয়োর সত্যাতা অবশ্য যাচাই করেনি জি ২৪ ঘণ্টা।
ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল জেসিবি। তবে রবিবার সন্ধেয় তাকে আটক করল ইললামপুর থানার পুলিস। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই প্রথম নয় আগেও এরকম অনেক খাপ পঞ্চায়েত বসিয়ে দাদাগিরি করেছে জেসিবি। অভিযোগ উঠে আসছে, বছর দুয়েক আগে এভাবেই একজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলে সে। এলাকার মানুষ তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করতে পারেনি। কারণ তার সঙ্গে শাসকদলের যোগাযোগ গভীর। জানা যাচ্ছে চোপড়া থানায় জেসিবির বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর মামলা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে চোপড়ার বিধায়কের হাত ধরে জেসিবির উত্থান। চোপড়ার লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চয়েত ও সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একাংশ দেখভালের ভার ছিল। সেই সূত্রে বাহুবলী হয়ে ওঠে জেসিবি ওরফে তাজেমুল। ওই যুগলকে মারধরের পর কেউ থানায় যেতে সাহস করেনি। এমনকি ওই যুগল হাসপাতালেও যেতে পারেননি। কারণ বাহুবলী জেসিবি। এমনটাই বলছেন এলাকার মানুষজন।
পুলিস সূত্রে খবর ডাঙ্গাপাড়ায় তার এলাকা থেকেই জেসিবিকে আটক করে পুলিস। চোপড়া থানার পুলিস বিশাল পুলিস বাহিনী নিয়ে গিয়ে তাকে আটক করে আনে। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে তাকে চোপড়া থানায় না নিয়ে গিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ইসলামপুর থানায়। স্থানীয় মানুষজনের বক্তব্য, জেসিবির দলবল তাকে চোপড়া থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় তাকে চোপড়া থানায় রাখতে সাহস পায়নি পুলিস। মারধরের ঘটনা কেউ জেসিবির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেনি। তাই সুয়োমোটো মামলা করছে পুলিস। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে যেসব পুরনো মামলা আছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।