ছাদ থেকে জল-খাবারে মাছি, ঝোপেঝাড়ে সাপ! ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র
এই সময় | ০১ জুলাই ২০২৪
এই সময়, খানাকুল: অ্যাজ়বেসটসের ছাউনি ভেঙে গিয়েছে। ফাটল ধরেছে দেওয়ালে। অল্প বৃষ্টি হলেই জমে যায় জল। আবর্জনায় ভরা। চারিদিক ছেয়েছে আগাছায়। মাঝেমধ্যেই বেরিয়ে আসে বিষধর সাপ। তার মধ্যেই চলছে পঠনপাঠন। এমনই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি খানাকুলের তাঁতিশাল গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝপুরের ১৫০ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের।অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। বিপদ মাথায় নিয়েই রয়েছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। একাধিক বার ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের চারদিকে আবর্জনা ছড়িয়ে থাকে। গোবর পড়ে থাকে যত্রতত্র। এতটাই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, যে রান্না করার সময়েই মশা-মাছি উড়ে বেড়ায়। রান্নার সামগ্রী অন্য স্কুলে রেখে আসতে হয়।
কিন্তু বাচ্চাদের জন্য মজুত চাল, ডাল, ডিম এখানেই রাখতে হয়। এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে একশোর উপর শিশু আসে। গরিব ঘরের বাচ্চাদের স্কুলের গণ্ডির মধ্যে নিয়ে আসতে সরকার বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি তার মধ্যে অন্যতম। সেখানে এখানকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এমন অবস্থায় কেউ আসতেই চাইছে না। অবিলম্বে মডেল সেন্টার না হলে আর ছেলেমেয়েদের এখানে পাঠাবেন না বলে জানিয়েছেন অভিভাবকদের অনেকেই।
অভিভাবকদের একজন সুস্মিতা রায় বলেন, ‘অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে বাচ্চাদের পাঠিয়েও শান্তি নেই। কখন কী বিপদ ঘটে সেই ভয়ে ভয়ে থাকি। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির কথা ব্লক প্রশাসনে জানানো হয়েছে। কিন্তু কিছুই হয়নি। এই পরিস্থিতি থাকলে আর বাচ্চাদের এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে পাঠানো যাবে না।’
কচিকাঁচাদের বক্তব্য, বেশ ভয়ে ভয়েই তারা এখানে পড়াশোনা করতে আসে। আগাছা থেকে কখনও সাপ বেরোচ্ছে। আবার কখনও আবর্জনা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তা ছাড়া মশার কামড় তো আছেই। খাবারে মাছি বসে।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী দেবীরানি আচার্য বলেন, ‘আমরা আর পারছি না। বারবার আবেদন করেছি। কিছুই হয়নি। জলের কল নেই। অন্যের কলে থেকে জল আনতে গেলে বকাঝকা শুনতে হয়। ছাদ দিয়ে জল পড়ছে। বিষধর সাপ বেরিয়ে পড়ছে। বিপদের মধ্যে আমরা আছি। এ ভাবে সেন্টার চালানো যায় না। আমরা চাইছি মডেল সেন্টার করে দেওয়া হোক। কিন্তু কেউই কোনও কথায় গুরুত্ব দেয়নি।’ খানাকুল ব্লক প্রশাসন অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।