সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে ঝাড়গ্রামের যুবককে মারধরের ঘটনায় শুরু ধরপাকড়। এই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করল জামবনি থানার পুলিশ। ধৃতেরা হল মহেন্দ্র মিত্তাল এবং ডাক্তার সোরেন। মহেন্দ্র ঝাড়গ্রামের বাছুরডোবার বাসিন্দা। বছর আটচল্লিশের ওই ব্যক্তি রাস্তা তৈরির কাজে ম্যানেজার পদে রয়েছেন। অপর ধৃত পঁয়ত্রিশ বছর বয়সি ডাক্তার সোরেন ঝাড়গ্রামের জমদারডাঙার বাসিন্দা। তিনি সাইট ম্যানেজার। ধৃতদের সোমবার আদালতে তোলা হবে। প্রসঙ্গত, রাস্তা তৈরির কাজ চলাকালীন ঠিকাদার সংস্থার নির্মাণ সামগ্রী চুরির অভিযোগ উঠেছিল মৃত ওই যুবকের বিরুদ্ধে।
ঝাড়গ্রাম শহরের বেনাগেড়িয়ার বাসিন্দা সৌরভ সাউ এবং অক্ষয় মাহাতো দুই বন্ধু। তাঁরা ২২ জুন একটি স্কুটি নিয়ে জামবনি থানার খাটকুড়াতে ঘুরতে গিয়েছিলেন। খাটকুড়াতে রাস্তা তৈরির কাজ হচ্ছে। সেখানে ঠিকাদার সংস্থার নির্মাণ সমগ্রী বোঝাই একটি গাড়ি ছিল।সেই গাড়ি থেকে নির্মান সামগ্রী চুরি যাওয়ার অভিযোগ ছিল। আর সেই এলাকার কাছাকাছি তারা দুই বন্ধু গিয়েছিল। বিকেলে বাড়ি ফেরার সময় তাদের দেখে এলাকার লোকজন চোর সন্দেহ করে। এবং তাঁদের দুজনকে গণপিটুনি দিতে থাকে।
এই ঘটনায় তাঁরা রীতিমতো গুরুতর জখম হন। ঘটনার খবর জামবনি থানার পুলিশ পাওয়া মাত্র তাদের উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। তাঁদের পরিবারের লোকজন পুলিশ মারফত খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখে তাদের ছেলেদের ওই অবস্থা। এর পর ২৭ জুন জামবনি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। রবিবার সকালে মৃত্যু হয় সৌরভের। ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বছর তেইশের তরুণ সৌরভ। তাঁর বন্ধু বছর বাইশের অক্ষয় ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন।
সৌরভের বাবা পেশায় টোটো চালক অবনী সাউ। তিনি বলেন,”আমার ছেলে তার বন্ধুর সঙ্গে স্কুটি নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিল। এলাকার মানুষজন চোর সন্দেহ করে আমার ছেলে ও তার বন্ধুকে মারধর করে। পরে আমরা বিষয়টি জামবনি থানার মারফত জানতে পারি। হাসপাতালে এসে দেখি আমার ছেলে ও তার বন্ধু ভর্তি রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, চোর সন্দেহে কাউকে এভাবে মারধর ঠিক না। সেই জন্য পুলিশ প্রশাসন রয়েছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। মৃত সৌরভের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতেই শুরু হয়েছে ধরপাকড়।