তিন নয়া আইনের প্রতিবাদে শুনানি বয়কটের সিদ্ধান্ত তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের
এই সময় | ০১ জুলাই ২০২৪
দেশজুড়ে বলবৎ হয়েছে নতুন তিনটি ফৌজদারি আইন — ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS), ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (BNSS) ও ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম (BSA)। তার জায়গায় অবলুপ্ত হয়েছে IPC 1860, CrPC 1973 ও Indian Evidence Act, 1872।আর এই তিন নয়া ফৌজদারি আইন চালু করার প্রতিবাদে সোমবার মাসের প্রথম দিন শুনানি বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিলেন কলকাতা হাইকোর্টের তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা। এদিন হাইকোর্টের কোনও এজলাসেই মামলার শুনানির সময় তাঁরা উপস্থিত হননি। বেশিরভাগ মামলাতে রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা দাঁড়াননি। ফলে বেশিক্ষণ শুনানি চলা সম্ভব হয়নি।
রাজ্যের শাসকদলের আইনজীবীরা এই তিন আইনকে 'নির্মম' বলে অভিহিত করেছেন। এদিন বিভিন্ন মামলা শুনানির জন্য উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে। কিন্তু, একপক্ষের আইনজীবী এজলাসে উপস্থিত হননি। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের অন্যান্য বেঞ্চগুলির ক্ষেত্রেও একই দৃশ্য দেখা যায়।
এই তিন আইনের বিরোধিতা প্রসঙ্গে তৃণমূলের আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক এই তিনটি আইন লাগু হওয়ার প্রেক্ষিতে দেশের বিচারব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করেছেন। পাশাপাশি একতরফাভাবে এই আইন পাশ করানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। পাশাপাশি আইনগুলি অবিলম্বে কেন্দ্রের সংশোধন করা উচিত বলে জানান তিনি।
এই তিনটি নতুন ফৌজদারি আইনের সমর্থন করেন না বলে জানান বামপন্থী আইনজীবীরাও। কিন্তু, তাঁরা শুনানি বয়কটের দিকে হাঁটেননি। এর আগে রাজ্য বার কাউন্সিল এই তিনটি আইনের বিরোধিতা করে হাইকোর্টের শুনানির ডাক দিয়েছিল। এদিকে এদিন রাজ্যের সমস্ত আদালতে প্রতীকী কর্মসূচি নিয়েছে বার কাউন্সিল অব ওয়েস্ট বেঙ্গল। যেখানে 'কালা দিবস' পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের এই নয়া তিন আইন নাগরিক বিরোধী, দাবি বার কাউন্সিলের।
উল্লেখ্য, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন যাতে দণ্ড সংহিতা বলবৎ করার তারিখ পিছানো হয়। কিন্তু, রবিবার রাত ১২টার পর (১ জুলাই) থেকে লাগু হয়েছে এই তিন আইন। তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন রবিবার জানান, ‘ইন্ডিয়া’ ব্লক সংসদে এই নিয়ে সরব হবে। তবে নতুন অভিযোগ আইপিসি অনুসারে আর দায়ের করা যাবে না। কিন্তু, পেন্ডিং কেসগুলি চলবে পুরনো আইনেই। সেক্ষেত্রে আইনজীবী, বিচার বিভাগ সমস্ত ক্ষেত্রেই দুটি আইনই মাথায় রাখতে হবে। নয়া আইনগুলির অন্যতম বৈশিষ্ট্য, এফআইআর থেকে শুরু করে আদালতে বিচার প্রক্রিয়া পর্যন্ত পুরো ব্যবস্থা থাকবে অনলাইনে।