কোচবিহারে বাসে দুষ্কৃতীরা, ফোন-গয়না ছেড়ে পার্সেলের খোঁজ! রহস্য
এই সময় | ০১ জুলাই ২০২৪
দিনে দুপুরে বাস ডাকাতি! কিন্তু, কোনও যাত্রীদের থেকে কিছু চায়নি দুষ্কৃতীরা। বরং একটি পার্সেলের জন্যই বন্দুক দেখায় তারা! কী ছিল ওই পার্সেলে? ঘনাচ্ছে রহস্য।
জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে কোচবিহার জেলার ঘোকসাডাঙা থানা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। বাসটি কৃষ্ণনগর থেকে কোচবিহারের দিকে যাচ্ছিল। যাত্রীদের দাবি, ফালাকাটা সংলগ্ন এলাকা থেকে কয়েকজন যুবক মাস্ক পরে বাসে ওঠে। এরপরে ঘোকসাডাঙ্গা এলাকায় তারা যাত্রীদের বন্দুক দেখিয়ে ভয় দেখায় এবং গুলি চালায় বলেও দাবি যাত্রীদের একাংশের।বাসে দু'জন চালক ছিলেন সেই সময়। অসীম পাল নামক চালক বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, 'কয়েকজন বাসে উঠে আমাকে টেনে পিছনে নিয়ে যায়।' তিনি আহত হয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। যাত্রীদের কথায়, তাঁদের থেকে ফোন বা অন্য কিছু চাওয়া হয়নি। বাসের মধ্যে থাকা একটি পার্সেল নেওয়ার জন্যই উঠেছিল ওই দুষ্কৃতীরা। আর তা নিয়েই নেমে যায় তারা।
এর যাত্রী পূজা সরকার বলেন, ‘ওদের মুখ মাস্কে ঢাকা ছিল। হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। আমরা সকলেই ভয় পেয়েছিলাম।’ এই ঘটনায় আতঙ্কের চোরা স্রোত যাত্রীদের মধ্যে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। সেখানে পৌঁছন কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য, এনবিএসটিসি চেয়ারম্যান পার্থপ্রতীম রায়।
ওই পার্সেল বা ব্যাগের মধ্যে ঠিক কী ছিল? কীসের জন্য বাসে এভাবে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করল দুষ্কৃতীরা? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ওই বাসে উপস্থিত যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার নেপথ্যে ঠিক কী রহস্য রয়েছে? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনাস্থল থেকে যাত্রীদের জন্য বিকল্প যান পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়। কোথা থেকে ওই মাস্ক পরা ব্যক্তিরা বাসে উঠেছিল? তাদের কথা বার্তা, উচ্চতা, কী কী অস্ত্র তাদের সঙ্গে ছিল? যাত্রীদের এই সমস্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
দিনে দুপুরে এভাবে বাস ডাকাতির ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে অত্যন্ত বিরল। তার থেকেও বেশি গোয়েন্দাদের কাছে খটকার কারণ ওই পার্সেল বা ব্যাগ। তাতে কী এমন জিনিস ছিল যার জন্য এই ডাকাতি? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যে একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে এবার বাসে দুষ্কৃতী হানার ঘটনায় নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, 'দুস্কৃতীরা কোথা থেকে বাসে উঠল, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে।' তবে ওই পার্সেল প্রসঙ্গে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুরো বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ বলে জানান তিনি।