এই সময়: করোনার সময়ে স্থানীয় স্তরে শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় ভালো পরিষেবা দিয়েছিলেন প্রশিক্ষিত গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবকরা। নিছক ‘কোয়াক’-এর তকমা ঘুচিয়ে তাঁরা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লিভার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়েছিলেন মুমূর্ষুদের ঘরে। সেই ‘অক্সিজেন অন হুইল’ পরিষেবার আরও সম্প্রসারণের কাজ আগেই শুরু করেছিল ওই সংস্থা। ‘অক্সিজেন সিকিউরিটি সার্কেল’ নামের সেই পরিষেবা কেমন চলছে, রবিবার সংস্থার অষ্টাদশ প্রতিষ্ঠা দিবসে তারই খোঁজখবর নেওয়ার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম পালিত হয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবকদের একমঞ্চে এনে। এরই পাশাপাশি ভারতীয় জাদুঘরের আশুতোষ জন্মশতবার্ষিকী হলে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে এদিন সম্মান জানানো হয় প্রায় ৩০০ জন গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবককে।লিভার ফাউন্ডেশনের তরফে লিভার রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘কোভিড শিখিয়েছিল, অক্সিজেন জোগানোর ব্যাপারে আমাদের সকলেরই প্রস্তুতি কত কম। বিশেষ করে দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে। তৃতীয় ঢেউয়ের আগে তাই প্রচুর অক্সিজেন কনসেনট্রেটর কেনা হয়েছিল সরকারি-বেসরকারি স্তরে। কোভিড মিটে যাওয়ার পরে, অক্সিজেনের সেই বিপুল চাহিদা কমার পর সেই পরিকাঠামোটাকেই কলকাতা ও বিভিন্ন জেলা সদরের বাইরে গোটা রাজ্যের একটা বিস্তীর্ণ অংশে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা শুরু হয় আমাদের সংস্থার উদ্যোগে। লক্ষ্য ছিল, ভবিষ্যতে যাতে এমন কোনও মহামারী এলে যাতে তার মোকাবিলা করা যায়।’
অভিজিৎবাবু জানান, সেই ‘অক্সিজেন সিকিউরিটি সার্কেল’-এর কাজে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবকদের নানা সংগঠনকে একছাতার তলায় আনা হয়। প্রায় ৪০০টা কনসেনট্রেটর ছড়িয়ে দেওয়া হয় পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, মালদা, দুই ২৪ পরগনার সুন্দরবনের দুর্গম ও প্রত্যন্ত জায়গায়। কোথায় কার কখন অক্সিজেন প্রয়োজন, গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবকদের দায়িত্ব সেটা চিহ্নিত করার পাশাপাশি অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের সাহায্যে বিনামূল্যে অক্সিজনে পরিষেবা দেওয়া এবং প্রয়োজন ফুরোলে যন্ত্রটি ফিরিয়ে আনা ও তার যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা। এর জন্য তাঁরা বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এদিনের অনুষ্ঠানে তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়। পাশাপাশি, নানা বাস্তব সমস্যার মোকাবিলা কী ভাবে সম্ভব, তারও দিশা দেখানো হয় তাঁদের।