শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: চোপড়ায় যুগলকে তালিবানি কায়দায় নির্যাতনের ঘটনায় ধৃত জেসিবির পুলিশ হেফাজত। পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল ইসলামপুরের আদালত। ধৃতের বিরুদ্ধে মোট সাতটি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তার মধ্যে দুটি জামিন অযোগ্য এবং তিনটি জামিনযোগ্য ধারার মামলা। এর আগে জেসিবির বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র আইন-সহ মোট ১২টি মামলা ছিল।
রবিবার জেসিবির ‘দাদাগিরি’র ভিডিও ভাইরাল হয়। দেখা গিয়েছে, মাটিতে ফেলে এক যুবক ও যুবতীকে লাগাতার লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করছেন জেসিবি। চারিদিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন মহিলা-সহ অসংখ্য মানুষজন। অথচ কেউ রক্ষা করার জন্য এগিয়ে যেতে দেখা যায়নি। থামাননি কেউ। না। বরং যুগলকে পাশবিকভাবে মারধরের মর্মান্তিক দৃশ্য রীতিমতো তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন ওই তরুণ-তরুণী। তার পর গ্রামে সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ তদন্তে নেমে জেসিবিকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অভিযুক্ত জেসিবি চোপড়ার বিধায়ক তৃণমূলের হামিদুল রহমানের ‘ডান হাত’বলে পরিচিত। এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে চোপড়ায় বামেদের মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাতে এক সিপিএম নেতার মৃত্যুও হয়। সেই ঘটনায় নাম জড়ায় জেসিবির। গ্রেপ্তারও করা হয় তাকে। জেল থেকে কয়েকদিন আগেই জামিনে মুক্ত হয়ে গ্রামে ফেরে। ফের দৌরাত্ম্য শুরু হয় জেসিবি ওরফে তাজিমুল ইসলামের। স্থানীয় লক্ষ্মীপুর সীমান্তের বাসিন্দা।
তার ‘হম্বিতম্বি’তে তটস্থ স্থানীয় গ্রামবাসীরা। সবসময় আতঙ্কে থাকেন তাঁরা। স্থানীয়দের দাবি, এলাকায় তোলাবাজি করত জেসিবি। নতুন বাড়ি নির্মাণ থেকে হাটে ধান, ভুট্টা বিক্রির পর ব্যবসায়ীদের ‘তোলা’ দিতে হয় তাকে। এমনকি চা বাগান দখলের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সে কারণে জেসিবি সালিশি সভায় তালিবানি কায়দায় নির্মম অত্যাচার করলেও প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেননি কেউই। সকলেই নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন।