• গাড়ির ধোঁয়া অতিরিক্ত হলেই সিগন্যাল গ্রিন, কামাল AI প্রযুক্তির
    প্রতিদিন | ০১ জুলাই ২০২৪
  • অর্ণব আইচ: গাড়ির ধোঁয়ায় বায়ুদূষণ কমাতে এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারই সাহায‌্য নিচ্ছে লালবাজার। ট্র‌্যাফিক সিগন‌্যালে বেশি সংখ‌্যক গাড়ি দাঁড়িয়ে দূষিত ধোঁয়া নির্গমন করলেই লাল সিগন‌্যাল হয়ে যাবে সবুজ। ফলে সেই গাড়িগুলো আর সিগন‌্যালে না দাঁড়িয়ে এগিয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই কলকাতার কয়েকটি ট্র‌্যাফিক সিগন‌্যালে পরীক্ষামূলকভাবে এই ব‌্যবস্থা চালু হয়েছে। এতে ফল মিললে সারা কলকাতাজুড়ে চালু হবে এই ব‌্যবস্থা।   

    কলকাতায় কার্বন নির্গত হয়ে দূষণের জন‌্য মূল দায়ী যানবাহন। পুলিশের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, শহরের বড় রাস্তার সংযোগস্থলগুলোতে সব থেকে বেশি দূষণ হয়। আর এই দূষণের জন‌্য দায়ী গাড়ি থেকে ক্রমাগত বের হওয়া দূষিত ধোঁয়া। পুলিশের দাবি, শহরের যে কোনও খোলা জায়গার তুলনায় মূল রাস্তার সংযোগস্থলগুলোতে কার্বন নির্গমন হয়ে বায়ুদূষণের পরিমাণ প্রায় ২৯ গুণ বেশি। ট্র‌্যাফিক সিগন‌্যাল লাল হয়ে যাওয়ার পর নিয়ম মেনে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। একের পর এক গাড়ি ইঞ্জিন চালু রাখায় দাঁড়িয়ে ছাড়তে থাকে কালো ধোঁয়া। আর তার সঙ্গে বের হতে থাকে কার্বন, যা থেকে হয় বায়ুদূষণ। 

    সমীক্ষায় পুলিশ দেখেছে, যে সংযোগস্থলগুলোতে গাড়ি এক থেকে তিন মিনিট ধরে লাল সিগন‌্যালে দাঁড়িয়ে থাকে, সেই সংযোগস্থল ঘিরেই হয় অতিরিক্ত বায়ুদূষণ। এমনও দেখা গিয়েছে যে, বাতানুকূল যান নয়, এমন গাড়ির যাত্রীরা ক্রমাগত বের হওয়া ধোঁয়ার কারণে রীতিমতো অস্বস্তি বোধ করছেন। এমনকী, শ্বাসকষ্টও হচ্ছে অনেকের। আবার কোনও কারণে শহরের কোনও রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হলে এই বায়ুদূষণের সমস‌্যাও বেড়ে যায়।

    এই বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে আনতেই এবার লালবাজারের ট্র‌্যাফিক বিভাগ সাহায‌্য নিচ্ছে গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার। গুগল তার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে জানতে পারছে যে, কোন রাস্তার সংযোগস্থল অথবা কোন দিকটায় বেশি পরিমাণ কার্বন নির্গত হয়ে বায়ুদূষণ হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গেই সেই তথ‌্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে পৌঁছে যাচ্ছে লালবাজারের ট্র‌্যাফিক কন্ট্রোল রুমে। ট্র‌্যাফিক কন্ট্রোলের আধিকারিকরা ওই সংযোগস্থলে ডিউটিতে থাকা আধিকারিক অথবা ট্র‌্যাফিক সিগন‌্যালে থাকা পুলিশকর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছে, লাল সিগন‌্যাল সুবজ করে দিতে।

    ফলে যে গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে থাকার ফলে বায়ুদূষণ হচ্ছিল, এবার সেই গাড়িগুলো চলতে শুরু করার ফলে ওই জায়গা থেকে বায়ুদূষণ কমছে। ফের অন‌্য দিকে বায়ুদূষণ শুরু হলে ফের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ‌্যমে গাড়ির সিগন‌্যাল পরিবর্তিত হচ্ছে। লালবাজারের এক কর্তা জানান, ‘গ্রিন লাইট’ প্রকল্পের অধীনে এই পদ্ধতিতে শহরে বায়ুদূষণ কমানোর চেষ্টা হচ্ছে। এক পুলিশকর্তা জানান, সংযোগস্থলে যত কম সংখ‌্যক গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকবে, ততই কমবে দূষণ। এখনও পর্যন্ত কলকাতার কুড়িটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থলে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)