• সেতুর পিলারেও পসরা, মেরামতি হবে কী ভাবে?
    এই সময় | ০২ জুলাই ২০২৪
  • ফুটপাথ জুড়ে পরপর খাবারের দোকান। গ্যাস জ্বালিয়ে চলছে রান্না। পাশে সার দিয়ে রাখা টেবিল-চেয়ারে বসে চলছে খাওয়াদাওয়া। পাশের ৫ ফুট রাস্তার উপরে কেউ বিক্রি করছেন ফল, কেউ মোবাইলের কভার। তারই বাকি অংশ দিয়ে চলছে ভ্যান, মোটরবাইক। এবং এ সব এড়িয়ে কোনওমতে যাতায়াত পথচারীদের। অফিসের ব্যস্ত সময়ে যে কতখানি ঝুঁকির সেই যাত্রী, সেটা অনুমান করা কঠিন নয়। ছবিটা শিয়ালদহ স্টেশন সংলগ্ন এলাকার।যার দু’দিকের ফুটপাথই শুধু চুরি যায়নি, একের পর এক দোকানের কারণে সেতুর নীচে থাকা পিলারও ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন অবস্থায় শিয়ালদহের বিদ্যাপতি সেতুর সংস্কার কী ভাবে সম্ভব, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা কেএমডিএ। কারণ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সেতু সংস্কারের জন্য যান চলাচল বন্ধ করতে না হলেও সেতুর নীচের দোকান সরাতে হবে।

    সোমবার দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, সেতুর দু’দিকের ফুটপাথে ফল, সব্জি, মোবাইলের জিনিসপত্র, পোশাক, জুতো, বিরিয়ানি থেকে ফাস্ট ফুড — নানা জিনিসের পসরা। কেউ কেউ সেতুর পিলার দখল করেই দোকান খুলেছেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই তল্লাটে ফলের ব্যবসা করছেন সফিকুল শেখ।

    তাঁর বক্তব্য, ‘ফুটপাথ থেকে সরে যাওয়ার কথা তো কেউ কোনওদিন বলেনি। বললে সরে যেতে আপত্তি নেই।’ কিন্তু পিলার দখল করে দোকান তৈরি হলো কী ভাবে? ব্যবসায়ী সুমন দত্তের দাবি, ‘শহরের অধিকাংশ সেতুতেই এ ভাবে অস্থায়ী দোকান তৈরি হয়েছে।’ সেতুর মেরামতিতে তাঁদের আপত্তি নেই। তবে পুজোর আগে সেখান থেকে সরবেন না বলে জানিয়ে দিচ্ছেন সুমন।

    দীর্ঘদিন ধরে শিয়ালদহ স্টেশন হয়ে যাতায়াত করেন সোদপুরের শুভমিতা চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘হাতিবাগান বা গড়িয়াহাটের হকাররা এখন অনেকটাই নিয়ম মানছেন। কিন্তু এই ফুটপাথের ছবিটা বদলায়নি।’ জবরদখল নিয়ে সম্প্রতি পুর-প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে ফুটপাথ দখলমুক্ত করতে অভিযানে নামে পুলিশ।

    কিন্তু শিয়ালদহ চত্বরে সে ভাবে অভিযান হয়নি। বিদ্যাপতি সেতু সংস্কারের জন্য হকারদের সরাতে অবশ্য সম্প্রতি বৈঠক করেছেন প্রশাসনের কর্তারা। ব্যবসায়ীদের আর্জি, পুজোর পরে যা করার করা হোক। কারণ, পুজোর আগে দোকান বন্ধ রাখলে বিপুল লোকসান হবে।

    এমন অবস্থায় কেএমডিএ-র এক কর্তার বক্তব্য, ‘দোকান বন্ধ না করে সেতু মেরামত অসম্ভব। তবে সব দোকান একসঙ্গে বন্ধ করতে হবে না। তিন ধাপে কাজ হবে।’ পুজো পর্যন্ত অপেক্ষা করার মতো পরিস্থিতি আছে কি না, সেটা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার পরেই সিদ্ধান্ত হবে।
  • Link to this news (এই সময়)