এই সময়: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কলকাতায় ফিরে এলে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রেয়াত হোসেন সরকারের শপথগ্রহণ নিয়ে জটিলতা কেটে যাবে বলে আশা করছে তৃণমূল। রাজ্যপাল বোস আজ, মঙ্গলবার রাজ্যে ফিরছেন। যদিও তিনি দিল্লি থেকে সটান উত্তরবঙ্গে যাবেন বলে রাজভবন সূত্রের খবর। রাজভবন আনুষ্ঠানিক ভাবে সোমবার পর্যন্ত শপথগ্রহণ নিয়ে নতুন কোনও নির্দেশিকা জারি না করায় এ দিনও তৃণমূলের দুই জয়ী প্রার্থী বিধানসভায় আম্বেদকরের মূর্তির সামনে ধর্নায় বসেন।সায়ন্তিকা ও রেয়াত যখন শপথগ্রহণের দাবিতে ধর্না চালিয়ে যাচ্ছেন তখন কোচবিহার ও চোপড়ায় নারী নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে অগ্নিমিত্রা পলের নেতৃত্বে বিজেপির মহিলা বিধায়করা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিধানসভার গাড়ি বারান্দার সিঁড়িতে এ দিন অবস্থানে বসে পড়েন। যদিও বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভার গাড়ি বারান্দায় বসে অবস্থান করার জন্য বিজেপির বিধায়কদের কোনও অনুমতি দেননি।
এই পরিস্থিতিতে ঘণ্টা দুয়েক বিধানসভার প্রাঙ্গনের দুই প্রান্তে মুখোমুখি ধর্নায় বসে থাকেন দুই ফুলের জনপ্রতিনিধিরা। সায়ন্তিকাদের শপথগ্রহণ নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানা নিয়ে বিমান এ দিন বলেন, ‘এই বিষয়টি হাস্যকর তামাশার জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে। রাজ্যপালের এটা বোঝা উচিত। এখনও রাজ্যপালকে অনুরোধ করব, আপনি বিধানসভায় আসুন এবং ওঁদের শপথগ্রহণ করান। আমি আপনাকে গেট থেকে রিসিভ করে নিয়ে আসব। যদি ওঁর আসতে অসুবিধা থাকে, তা হলে অধ্যক্ষকে এই বিষয়ে দায়িত্ব দিন।’
রাজ্যপাল বোস যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সায়ন্তিকাদের শপথবাক্য পাঠ না-করান, তা হলে ‘আন-টোল্ড’ ঘটনা প্রকাশ করবেন বলে কয়েক দিন আগে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। যদিও কুণাল এ দিন বলেন, ‘রাজ্যপাল দিল্লিতে রয়েছেন কোনও কাজে। আমরা আশাবাদী, তিনি দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরার পর এই বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ করবেন। কলকাতায় ফিরলেই শপথ নিয়ে জটিলতা কেটে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।’
শপথের দাবিতে সায়ন্তিকাদের ধর্নার পাশাপাশি নারী নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে এদিন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পল, চন্দনা বাউড়ি, সুমিতা সিনহা ও শিখা চট্টোপাধ্যায় বিধানসভায় ধর্না শুরু করেছেন। অগ্নিমিত্রা বলেন, ‘পুলিশ লঘু ধারা দিয়ে যারা অপরাধ করছে, তাদের ছেড়ে দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী চুপ রয়েছেন। ধর্নায় বসার অনুমতি আমরা চেয়েছিলাম, উনি (অধ্যক্ষ) দেননি। উনি তৃণমূলকে অনুমতি দেন। তৃণমূল দু’দিন আগে এই জায়গায় (গাড়ি বারান্দা) বসে আন্দোলন করেছে।’
যদিও বিমানের বক্তব্য, ‘আগে থেকে যাঁরা অনুমতি চেয়েছেন, তাঁদের অনুমতি দিয়েছি। অনেক পরে ওঁরা অনুমতি চেয়েছেন। ওঁরা যদি প্রথমে অনুমতি চাইতেন, তা হলে বিবেচনা করতাম।’ বিজেপির মহিলা বিধায়কদের এই ধর্না কতদিন চলবে, তা অবশ্য এ দিন স্পষ্ট করেননি পদ্মের পরিষদীয় নেতৃত্ব।