দখলদার উচ্ছেদ নিয়ে বহরমপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের নাডুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো সমীক্ষা করা হচ্ছে। তার পরে পুরসভা পুলিশ প্রশাসন যৌথ ভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে। ইতিমধ্যে ওয়ার্ড ভিত্তিক ভিডিয়োগ্রাফির কাজ শুরু হয়েছে।’’ সূত্রের খবর বহরমপুর শহরে প্রায় ৩০ হাজার ব্যবসায়ী ব্যবসা করেন। তাঁদের মধ্যে ১১ হাজার ব্যবসায়ীর লাইসেন্স রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, গত বছর শহরের বিভিন্ন এলাকায় উচ্ছেদ করা হয়েছে। পুনরায় সমীক্ষা করা হচ্ছে। তারপরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
জেলা তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব বলেন, ‘‘হকারদের ব্যবসা করার নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়ম লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তাই ফুটপাথ দিয়ে মানুষ যাতে চলাফেরা করতে পারে, তা যেমন দেখা হবে, তেমনই হকারদের পেটে যাতে লাথি না পড়ে, সেটাও দেখা হবে। সেই সঙ্গে যারা সরকারি জমি দখল করছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
জেলা কার্যালয় বাদে অন্য জায়গাতেও সরকারি জমিতে তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের কমিটির কার্যালয় গড়ে ওঠার অভিযোগ রয়েছে। সে বিষয়ে অপূর্ব বলেন, ‘‘এই সংস্কৃতি সিপিএমের আমল থেকে শুরু হয়েছে। আমরাও আইনের ঊর্ধ্বে নই। প্রশাসন যে নির্দেশ দেবে মেনে চলব।’’
গত বছর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহরমপুর শহরে সরকারি খাস জমি দখল রুখতে বোর্ড লাগানো হয়। সেই বোর্ডে জমির পরিমাণ উল্লেখ করে সেখানে কোনও প্রকার নির্মাণ কাজ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে লেখা হয়েছে। গত বছর জেলাশাসকের দেওয়া এমনই সাইন বোর্ড বহরমপুরে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে পড়ে। সেই বোর্ড জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে এখনও জ্বলজ্বল করছে।
বহরমপুরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসের সামনের রাস্তার ধারে সরকারি জমিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা তথা বহরমপুর পুরসভার পুরপ্রতিনিধি ভীষ্মদেব কর্মকার একটি অফিস তৈরি করেছেন। সেই অফিস থেকে তৃণমূল ছাত্রপরিষদের কাজকর্ম চলে। সেই অফিসও কী উচ্ছেদ হবে? সেখান থেকে খানিকটা দূরে জেলা প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের উল্টো দিকে সরকারি জমিতে তৃণমূলের একটি কার্যালয় হয়েছে বলে দাবি। সেটিতে জেলা তৃণমূল কার্যালয় বলে লেখা রয়েছে। সেই কার্যালয় কী উচ্ছেদ হবে সেই প্রশ্নও উঠেছে। একই ভাবে ইন্দ্রপ্রস্থে সরকারি জমিতে শাসক দলের একটি কার্যালয় তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক তথা পুরপ্রতিনিধি ভীষ্মদেব কর্মকার অবশ্য এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।