• রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে শিলিগুড়ি কেন যাবে নির্যাতিতা, চোপড়াকাণ্ডে প্রশ্ন গ্রামবাসীর
    ২৪ ঘন্টা | ০২ জুলাই ২০২৪
  • ভবানন্দ সিংহ: রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন না উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার নির্যাতিতা। কারণ যা হয়েছে তার পরে আর এনিয়ে হইচই তাঁরা চান না। একটি মেয়ের সম্মানের প্রশ্ন এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। বরং রাজ্য়পাল যদি জানতে চান তাহলে তিনি গ্রামে এসে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করে জেনে নিন।

    উল্লেখ্য, রবিবার তুলকালাম পরিস্থিতি হয় চোপড়ার লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এক যুবক ও যুবতীকে প্রকাশ্যে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করে এলাকার বাহুবলী নেতা তাজেমুল ইসলাম ওরফে জেসিবি। ওই যুগলের বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বসানো হয় সালিশি সভা। জেসিবির দাপটে এলাকায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া নিষিদ্ধ। নিষিদ্ধ সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলাও। শুক্রবার বিকেলে তাঁদের উপর ওই নৃশংশ অত্যাচারের পরে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যেতে পারেনি ওই যুবক-যুবতী। দু'জনকে আর্থিক জরিমানাও করা হয় বলে খবর। একজন মহিলাকে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে মারধরের ওই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ওই ভিডিয়োর সত্যাতা অবশ্য যাচাই করেনি জি ২৪ ঘণ্টা।

    ওই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর গ্রেফতার করা হয় তাজেমুল ওরফে জেসিবিকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই প্রথম নয় আগেও এরকম অনেক খাপ পঞ্চায়েত বসিয়ে দাদাগিরি করেছে জেসিবি। অভিযোগ উঠে আসছে, বছর দুয়েক আগে এভাবেই একজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলে সে। এলাকার মানুষ তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করতে পারেনি। কারণ তার সঙ্গে শাসকদলের যোগাযোগ গভীর। জানা যাচ্ছে চোপড়া থানায় জেসিবির বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর মামলা রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে চোপড়ার বিধায়কের হাত ধরে জেসিবির উত্থান। চোপড়ার লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চয়েত ও সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একাংশ দেখভালের ভার ছিল। সেই সূত্রে বাহুবলী হয়ে ওঠে জেসিবি ওরফে তাজেমুল। ওই যুগলকে মারধরের পর কেউ থানায় যেতে সাহস করেনি। এমনকি ওই যুগল হাসপাতালেও যেতে পারেননি। কারণ বাহুবলী জেসিবি। এদিকে, ওই ঘটনার পর নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু নির্যাতিতা তা অস্বীকার করেছেন। এনিয়ে রাজ্যপাল বলেন, নির্যাতিতা এখন একলা থাকতে চান।

    এখন গ্রামবাসীদেরও দাবি, নির্যাতিতা কেন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে শিলিগুড়ি যাবে। বরং রাজ্যপাল গ্রামে আসুন। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা চোপড়াবাসী বলতে চাইছি একটা মেয়েকে নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে কেন। একটা ঘটনা হয়েছে এটা আমরা স্বীকার করছি। একটা ছেলের সঙ্গে ওর সম্পর্ক ছিল। সমাজের চোখে এটা খারাপ। এর জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বিষয়টি অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। রাজ্যপাল এখানে আসতে চাইছেন। উনি আসুন, ওঁকে স্বাগত। উনি এসে দেখে যান বাস্তব ঘটনা কী। কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে তা মেয়েটির সম্মান নিয়ে ছেলেখেলা। তাঁকে শিলিগুড়ি কেন নিয়ে যেতে হবে। কেউ চাইবে মেয়েকে এভাবে বাইরে নিয়ে যেতে?

    নির্যাতিত মহিলা সোমবার ক্যামেরার সামনে এসে ভিডিও ভাইরালকারীর শাস্তি চেয়েছিলেন। মঙ্গলবার তার দেখা পাওয়া যায়নি। নির্যাতিতের মা রহিমা খাতুন বলেন, রাজ্যপাল আসবেন শুনেছি। আমি ওঁকে কী বলব? যে ভিডিয়োটি করেছে তার আমি শাস্তি চাই। যে মেরেছে তাকে চিনি না।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)