একটা সময় ছিল, যখন বাঁকুড়ার সোনামুখী সিল্কে তৈরি পাগড়ি শিল্পের জগৎজোড়া নাম ছিল। এমনকী বিদেশের বাজারেও রফতানি হত এখানকার পাগড়ি। তবে সময় বদলেছে। পরিবর্তিত সময়ে কমেছে পাগড়ির চাহিদা। তবে নতুন করে সোনামুখী সিল্কের শাড়ির চাহিদা তৈরি হয়েছে ক্রেতাদের মধ্যে। ফলে বাঁকুড়ার সোনামুখী শহরের শ্যামবাজার, লালবাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় সিল্কের শাড়ি তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পীরা। চাহিদা ভালোই হয়েছে। লাভের মার্জিন খুব বেশি না থাকলেও মোটের উপর ব্যবসা ভালোই চলেছ। তাই সুদিন ফিরেছে বলেই এককথায় জানাচ্ছেন শিল্পীরা।'আগের চেয়ে পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো'নিখিল দাস নামে এক শিল্পী বলেন, 'এখন ভালোই চলছে, আগের চেয়ে অনেত উন্নতি হয়েছে। প্রতি পাড়াতেই শাড়ি তৈরির পরিমাণ বেড়েছে। সেই তুলনায় পাগড়ি তৈরির কাজ এখন হাতেগোনা, কারণ চাহিদা নেই।' নিখিল জানান, তাঁদের শাড়ি অনেক জায়গায় যায়। সেক্ষেত্রে রাজ্যের মধ্যে আসানসোল বা কলকাতার মতো শহরে যেমন বাঁকুড়ার এই সোনামুখী সিল্ক যায়, তেমনই যায় সুদূর মুম্বইতেও। এছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে বিদেশেও এর চাহিদা রয়েছে বলে জানান তিনি। লাভ কমলেও চাহিদা ভালোই রয়েছে বলে জানন এই শিল্পী।
কোন ডিজাইনের চাহিদা বেশি?আরও এক শিল্পী গৌতম দাস বলেন, 'শিল্পের চাহিদা আগের তুলনার অনেকটাই ভালো। আর তার কারণ হল ক্রেতাকে সরাসরি বিক্রি করা যাচ্ছে। অলাইনেও করা যাচ্ছে বিক্রি। তাই আগের চেয়ে বাজার ভালো।' তিনি জানান, বর্তমানে মটকা সিল্ক, অলওভার কোটকি, পাড় কোটকি, টেম্পল, কলাক্ষেত্র সহ বেশকিছু ধরনের ডিজাইনের এখন বেশ চাহিদা রয়েছে। একইসঙ্গে বাই কালারের ভালো চাহিদা রয়েছে বলেও জানান গৌতম দাস। তিনি জানান মহাজনের মাধ্যমে শাড়ি বিক্রি করে মুনাফা কিছুটা কম হলেও অনলাইনে বিক্রি করলে ভালোই মুনাফা পাওয়া যায়।
মজুরি কত মেলে?আবার নীলমাধব গড়াই নামে এক শিল্পীর কথায়, মহাজনের থেকে কাঁচামাল নিয়ে তা দিয়েই বুনছেন শাড়ি। আবার শাড়ি বোনার পর তা মহাজনই নিচ্ছেন। একটা শাড়ি বুনে কমবেশি ৬০০ টাকা মজুরি পাওয়া যায়। এখন পাগড়ির আর তেমন বাজার নেই। তাই তাঁরা শাড়ি বুনছেন বলেই জানান তিনি। আবার সন্ন্যাসী দাস নামে এক শিল্পী জানান, প্রতিযোগিতার বাজার, তাই লাভ একটু কম হলেও চাহিদা ভালোই রয়েছে। নিয়মিতভাবেই বাইরে যায় শাড়ি। আগের থেকে অনেকটাই ভালো পরিস্থিতি।