গুজবের জেরে ছাড়াছাড়ি! ৬ দিন পর মা-বাবার কোলে সেই শিশু
এই সময় | ০৩ জুলাই ২০২৪
চলন্ত ট্রেনে ব্যাগের মধ্যে করে 'শিশুপাচার'-এর অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিরাটি স্টেশনে ঘটে যাওয়া ধুন্ধুমারের ৬ দিনের মাথায় পরিবারের হাতে ফিরল শিশু। মঙ্গলবার বারাসতের কিশলয় হোম থেকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় শিশুটিকে। সূত্রের খবর, কিছু নথিপত্র সংক্রান্ত সমস্যা এবং মাঝে শনি ও রবিবার পড়ে যাওয়ার কারণে এখনও পর্যন্ত বাবা মায়ের হাতে তুলে দেওয়া যায়নি শিশুটিকে।প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার চলন্ত ট্রেনে ব্যাগের মধ্যে শিশু উদ্ধার হয়েছে, যাত্রীদের এমন দাবিকে কেন্দ্র করে তোলপাড় পড়ে যায় বিরাটি স্টেশনে। শিশু সহ মহিলাকে টেনে নামান হয় প্ল্যাটফর্মে। যাত্রীদের দাবি ছিল, ব্যাগের মধ্যে করে ওই মহিলা শিশুটিকে পাচার করছিলেন। উত্তেজিত জনতার হাতে ব্যাপক হেনস্থারও শিকার হন ওই মহিলা। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে মহিলা ও শিশুকে উদ্ধার করে জিআরপি। শুরু হয় তদন্ত। যদিও ওই দিন বিকেলেই জানা যায় মহিলা আসলে ওই শিশুরই মা। তারপর মহিলাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও শিশুটির ঠাঁই হয় কিশলয় নামে বারাসতের একটি হোমে।
পরবর্তীতে এই সময় ডিজিটাল ওই মহিলার বাড়িতে পৌঁছে যায়। জানা যায় মহিলা তাঁর স্বামীর সঙ্গে বামনগাছিতে ভাড়া থাকেন। স্বামী দিনমজুর। ঘটনার দিন মহিলা তার সন্তানকে নিয়ে শিয়ালদাগামী ট্রেনে চেপে ওষুধ আনতে এনআরএস হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। শিশুটি ট্রেনে কান্নাকাটি শুরু করলে মহিলা স্তন্যপান করানোর জন্য তাকে আঁচল দিয়ে ঢাকেন। তাঁর সঙ্গে ছিল একটি ব্যাগ। তাতে ছিল কিছু জামাকাপড়। সেই ব্যাগটি দিয়েও ঢেকে রাখেন শিশুটিকে। সেই সময়ই ট্রেনে উপস্থিত সহযাত্রীদের সন্দেহ হয়, ওই মহিলা ব্যাগের মধ্যে করে শিশুকে পাচারের চেষ্টা করছেন। তারপরেই ছড়ায় উত্তেজনা। মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন সহযাত্রীরা। কিন্তু মহিলার ভাষাগত সমস্যা থাকায় তিনি সঠিকভাবে উত্তর দিতে পারছিলেন না। একইসঙ্গে তাঁর কিছুটা মানসিক সমস্যা রয়েছে বলেও জানা যায়। এরপরেই টেনে হিঁচড়ে শিশু সহ ওই মহিলাকে ট্রেন থেকে নামানো হয়। তারপর বারাসতের ওই হোমে রাখা হয় শিশুটিকে।
এই বিষয়ে হোমের এক কর্মী জানান, নথিপত্র সংক্রান্ত কিছু জটিলতার কারণে দেরি হয়েছে। মাঝে শনি ও রবিবার পড়ে যাওয়ায়, আরও কিছুটা দেরি হয়েছে বিষয়টিতে। তবে অবশেষে মঙ্গলবার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় ওই শিশুটিকে। হোম থেকে মা সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হাতে শিশুটিকে তুলে দেওয়া