প্যাকেটজাত বাংলার ‘কালো পাঁঠা’র মাংস এখন মিলছে মধ্যপ্রাচ্যের বাহারিনের বাজারেও। কোনও বেসরকারি সংস্থার হাত ধরে নয়, রাজ্য সরকারের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ লাইভস্টক ডেভলমেন্ট কর্পোরেশনের মাধ্যমে নিয়মিত পাঁঠার মাংস রপ্তানি হচ্ছে বাইরে। এতে বিদেশী মুদ্রাও আয় হচ্ছে।ইতিমধ্যেই ‘জি-সিক্স’ দেশগুলিতে পাঁঠার মাংস রপ্তানির জন্য এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড প্রসেস ফুড প্রডাক্টস এক্সপোর্ট ডেভলপমেন্ট অথরিটির লাইসেন্স নিয়েছে কর্পোরেশন। লোকসভা ভোটের পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পমহলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে রপ্তানি ব্যবসায় সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
এমনকী, বাংলার বাণিজ্যমহলকে উৎসাহিত করতে পশ্চিমবঙ্গ লাইভস্টক ডেভলমেন্ট কর্পোরেশনকেই তিনি মডেল হিসেবে তুলে ধরেছেন। যদিও এবারে প্রথম নয়, কর্পোরেশন বহু আগেই এধরনের রপ্তানি ব্যবসা শুরু করেছিল। ২০২২ সালে বিশ্বকাপের সময়ে চার মাস ধরে নিয়মিত পাঁঠার মাংস পাঠানো হয়েছিল কাতারে। বাণিজ্যিক লেনদেনের নানা ত্রুটি বিচ্যুতির জন্য পরবর্তীকালে তা বন্ধ হয়ে যায়।
এবার অবশ্য কর্পোরেশন আইনগত খুঁটিনাটি সবদিক খতিয়ে দেখে গত ফেব্রুয়ারি থেকে এই রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে এক টনেরও বেশি কালো পাঁঠার মাংস পাঠানো হচ্ছে বাহারিনের বাজারে। এ জন্য কোল্ড চেন ব্যবহার করা হচ্ছে। তাতে মাংসের গুণগত মানের সব পরীক্ষাই উত্তীর্ণ হচ্ছে খুব সহজে।
লাইভস্টক কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গৌরি শঙ্কর কোঙার বলেন, ‘হরিণঘাটার পাঁঠার মাংসের বাজারে চাহিদা রয়েছে। নরম ও কম ফাইবার যুক্ত ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট’ বা বাংলার কালো ছাগলের মাংসের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।’ নবান্ন সূত্রের খবর, প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের পক্ষ থেকেও এই প্রজাতির ছাগল চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে গ্রাম বাংলার মানুষকে।
সেজন্য তৈরি করা হয়েছে চাষিদের উৎপাদক সংস্থা। কর্পোরেশন এদের কাছ থেকে ছাগল কিনে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে সেই মাংস প্যাকেটজাত করে বাজারে বিক্রি করছে। জানা গিয়েছে, কর্পোরেশন এখন দৈনিক তিন টন প্যাকেটজাত পাঁঠার মাংস উৎপাদন করে। যার সিংহভাগ দেশের ভিতরেই বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয়।
এর থেকে সামান্য অংশ বাঁচিয়ে সপ্তাহে একটনের কিছু বেশি মাংস আপাতত বাহারিনের বাজারে রপ্তানি করা হচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, পরবর্তীকালে বিদেশের অন্যত্র এই মাংস রপ্তানি করার পরিকল্পনাও রয়েছে।