বিশ্বজিৎ মিত্র: নদিয়ার শান্তিপুর পৌরসভার ডি গ্রুপ কর্মী সনৎ চক্রবর্তী। তিনি রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি। পাশাপাশি সারা বাংলা পৌর কর্মচারী ফেডারেশনের রাজ্যের সেক্রেটারি। অভিযোগ, শান্তিপুর পৌরসভার ডি গ্রুপ কর্মী হয়েও, তিনি পৌরসভায় আসেন না। অথচ প্রত্যেক মাসে তিনি মোটা টাকা বেতন তোলেন।
সে কারণেই শান্তিপুরের মৃণাল মৈত্র নামে এক পৌর নাগরিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন ওই তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা তথা পৌর কর্মচারীর বিরুদ্ধে। তাদের মতো নেতা থাকার কারণে শান্তিপুরের বুকে গত লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে তৃণমূলের পরাজয়।
যদিও এই প্রসঙ্গে পৌর কর্মচারী সনৎ চক্রবর্তীর সাফাই, যে সমস্ত শ্রমিক সংগঠন আছে, তার যা নিয়ম, তাতে নেতৃত্বরা স্পেশাল ছুটি পায়। সেক্ষেত্রে আমিও স্পেশাল ছুটি নিয়ে যাই। এছাড়া অন্য সময় আমার কর্মস্থলে আমি যাই। এটা নিয়ে মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনে আমাদের পরাজয় হয়েছে, তাই নির্বাচনের পরে নানা রকম অপপ্রচার, কুৎসা, মিথ্যাচার চলছে। এটা সঠিক নয়।
এই প্রসঙ্গে শান্তিপুরের সিপিআইএম নেতা তথা প্রাক্তন সিপিআইএম কাউন্সিলর সৌমেন মাহাতো সমালোচনা করে বলেন, '১৫ বছর কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্বভার সামলেছি। সেই সময় পৌরসভায় গিয়ে কোনও একবারের জন্যও সনৎ চক্রবর্তীকে দেখিনি, ওনাকে পৌর কর্মী হিসেবে পৌরসভায় কাজ করতে। উনি বর্তমানে শ্রমিক সংগঠনের নেতা হয়েছেন। শান্তিপুরের বুকে যত অসামাজিক কাজ, জমি-বাড়ি কেনাবেচা, প্রমোটারি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, লুট করেছেন। তৃণমূল কংগ্রেস দলকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষকে লুট করছে এরা।'
একই সঙ্গে নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র সোমনাথ কর সমালোচনা করে বলেন, 'দিনের পর দিন তিনি সাধারণ মানুষের ট্যাক্স দেওয়া টাকায় বেতন তুলছেন। অথচ কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছেন না। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শান্তিপুর পৌরসভার একাধিক বিষয়ে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে শান্তিপুর পৌরসভার একজন পৌর কর্মী যিনি শ্রমিক সংগঠনের জেলা স্তরের নেতা, তিনি কিভাবে কাজ না করে বেতন তুলে নিচ্ছেন। এই অনৈতিক কাজ তৃণমূল ছাড়া আর কেউ করতে পারে না। বিজেপি এই বিষয়টিকে সমর্থন করে না।'
যদিও শান্তিপুর পৌরসভার পৌর প্রধান সুব্রত ঘোষ জানান, 'তাঁর কিছু ছুটি পাওনা ছিল। এরপরেও অতিরিক্ত যদি ছুটি নিয়ে থাকেন, তিনি অবশ্যই ভুল কাজ করেছেন। এছাড়া প্রমোটিং বা অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে আমার সঠিক জানা নেই। যদি তিনি সেই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তাহলে দল তাঁর ব্যবস্থা নেবে। তবে পৌরসভায় কাজে না আসার বিষয়ে আমি তদন্ত করে দেখব। আগামীতে যাতে তিনি অযথা ছুটি নিতে না পারেন, সেই বিষয়টিও দেখব।'