গ্রামে রথ হতো না। রথের মেলা দেখতে যেতে হতো বেশ কিছুটা দূরে। শেষে পাঁচলা ব্লকের দেউলপুরের রথের মেলা শুরু করলেন বরুণ মালিক নামে গ্রামেরই এক যুবক। নিজের টাকা খরচ করে রথের মেলার আয়োজন করেন বরুণ। ২০১৭ সালে এই মেলা শুরু হয়। কিছুদিন পর থেকেই এই মেলা বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।দেউলপুর ছাড়া আশেপাশে প্রায় পাঁচ-ছয়টি গ্রামের লোকজন এই মেলা দেখতে আসেন। এখন আর তাঁদের দূরে যেতে হয় না। সব সম্প্রদায়ের মানুষ মেলায় অংশ নেন। বরুণ জানান, রথের সময় গ্রামের মানুষকে রথের দড়ি টানতে মেলা দেখতে অনেক দূরে যেতে হতো। শেষে ঠিক করা হয় গ্রামেই রথের মেলার আয়োজন করা হবে।
তাঁকে সঙ্গ দিয়েছিলেন রূপম মালিক, শুকদেব মালিক, উত্তম মালিক, গুরুপদ গোলুই, লোকনাথ চক্রবর্তীরাও। বরুণ উচ্চ মাধ্যমিক মাদ্রাসার শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘দেউলপুর, গোহারিয়া, বলরামপুর, ওয়াদিপাড়া ও গোন্দলপাড়ায় রথ হতো না। রথের মেলা দেখতে এই এলাকার মানুষ অনেক দূরে যেতেন। তাই মানুষকে আনন্দ দিতেই এই মেলার আয়োজন করি। এখন আমার বাবা-মাকে এই মেলা উৎসর্গ করি। অনেক বয়স্ক মানুষ রথের দড়ি টেনে তৃপ্তি পান। তা দেখে ভালো লাগে।’
শুধু রথ কিংবা রথের মেলা নয়। রথে চেপে জগন্নাথ দেব যান পাশের চক্রবর্তীপাড়ার মাসির বাড়ি। আট দিন ধরে চলে খাওয়া-দাওয়া। রথের মেলা দেখতে আসা লোকজনকে বিনামূল্যে ঝালমুড়ি খাওয়ান প্রফুল্ল মালিক। শুভময় মালিক কফি খাওয়ান সবাইকে। স্টল খুলে বিনামূল্যে ছোটদের লজেন্স দেন সনাতন মালিক।
জগন্নাথদেবের প্রসাদ হিসেবে সবাইকে বোঁদেও খাওয়ানো হয়। তা ছাড়া শিল্পীদের নিয়ে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেউলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত পাঁচলা বিধানসভার মধ্যে পড়ে। ওই বিধানসভার বিধায়ক গুলশান মল্লিক বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানটিতে সব সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ নেন। সম্প্রীতির মিলন ক্ষেত্রে হয়ে ওঠে।’