• 'শূন্য' থেকে শুরু করার প্রচেষ্টা, ই-মেলে জনমত জানতে চায় সিপিএম
    এই সময় | ০৪ জুলাই ২০২৪
  • গত বিধানসভা নির্বাচনের পর সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটেও রাজ্যে বামেদের ফলাফল শূন্য। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা এবং নবীন ও প্রবীণের সংমিশ্রণে প্রার্থী তালিকা তৈরির পরেও মানুষের আস্থা অর্জনে সিপিএম তথা গোটা বামফ্রন্ট কার্যত ব্যর্থ বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কারও কারও। আর এই ব্যর্থতার নেপথ্যে আমজনতা বিভিন্ন ধরনের যুক্তি ও ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন। সূত্রের খবর, দলের অন্দরেও এই নিয়ে হয়েছে পর্যালোচনা। আর এবার নির্বাচনী পর্যালোচনা নিয়ে সরাসরি আমজনতার মতামত জানতে আগ্রহী রাজ্য সিপিএম। এই বিষয়ে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টও করা হয়েছে দলের তরফে।সিপিএম-এর করা সেই পোস্টে লেখা, 'নির্বাচনী পর্যালোচনা, আপনাদের সকলের মতামতের প্রত্যাশী আমরা। ই-মেল মারফৎ আপনার তথা সরাসরি জানান পার্টিকে।' এক্ষেত্রে একটি ই-মেল অ্যাড্রেসও উল্লেখ করা হয়েছে ওই পোস্টে। সেটি হল- writetocpimwb@gmail.com। পোস্টের নিচে আরও লেখা, 'আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লিখুন, গোপনীয়তার সঙ্গে লিখুন।' রাজনৈতিকমহলের একাংশ মনে করছে, এর মধ্যে দিয়ে হয়ত সাধারণ মানুষের মন বুঝতে চাইছে সিপিএম।

    এই বিষয়ে সিপিএম নেতা রবীন দেব এই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, 'আমাদের পার্টি কমিটির মতামত নেয়, আবার যাঁরা ভোটে কাজ করেছেন তাঁদেরও মতামত নেয়। তারপরেও যে সমস্ত মানুষ আমাদের ভোট দেয়, তারাও ভোট সংক্রান্ত মতামত দিতে পারে। যাঁরা সাধারণ মানুষ, ভোটার, তাঁদেরও তো কোনও মতামত থাকতে পারে। সেই কারণেই মানুষের মতামত চাওয়া হচ্ছে।'

    ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কোনও আসন আসেনি বামেদের ঝুলিতে। একই ছবি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও। তাহলে কি মানুষের মতামত নিয়েই ২০২৬ সালের স্ট্র্যাটিজি ঠিক করতে চাইছে সিপিএম? এই প্রশ্নের উত্তরে রবীন দেব বলেন, 'মানুষই ইলেক্ট করে, মানুষই রিজেক্ট করে। মানুষের কথাই বড় কথা। মানুষই আমাদের ৩৪ বছর ইলেক্ট করেছে। আবার এই মানুষই আমাদের রিজেক্ট করে। তাই সেই মানুষের উপরে তো ভরসা রাখতে হবে।' পাশাপাশি সিপিএম-এর তরুণ নেতা তথা ২৪-র বাম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য এই সময় ডিজিটাল-কে বলেন, 'এটা হচ্ছে মানুষের কথা সরাসরি দলীয় নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটা মাধ্যম। তারপর সেগুলি নিয়ে আলোচনা হবে।' দীপ্সিতা ধর বলছেন, 'সাধারণ মানুষ, সাধারণ সমর্থক তাঁরা সাম্প্রতিক নির্বাচনে যা দেখেছেন বা বুঝেছেন সেই নিয়ে আলোচনা চান বা বলতে চান তাঁদের জন্যই এই ব্যবস্থা।'

    প্রসঙ্গত, এবারে ফলাফলে আরও ধস নেমেছে বামেদের। সিপিএমের প্রাপ্ত ভোটের হার ৫.৬৭ শতাংশ। একইভাবে রক্তক্ষরণ হয়েছে বামেদের শরিকদলগুলির ভোট ব্যাঙ্কেও।

    রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, বাম আমলের শেষের দিকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের যোগাযোগ নেই বলে বারেবারেই অভিযোগ উঠত। সাধারণ মানুষের দাবিদাওয়া বা আশা আকঙ্খা উপলব্ধিই করতে পারতেন না তাঁরা। ফলে ক্রমশ জনগণের মন থেকে হারিয়ে গিয়েছিল বামেরা। যার ছবিও ফুটে উঠেছিল ভোটবাক্সে। পরবর্তী নির্বাচনগুলিতে কমতে কমতে বাংলায় শেষ শূন্যে পরিণত হয়েছে সিপিএম তথা সমগ্র বামফ্রন্ট। সেক্ষেত্রে মানুষের মতামত গ্রহণের মধ্যে দিয়েই সিপিএম ফের একবার বঙ্গবাসীর মনে ফিরতে চাইছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
  • Link to this news (এই সময়)