দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সদ্যই জামিন পেয়েছেন ভাঙড়ের ‘তাজা নেতা’ আরাবুল ইসলাম। বুধবারই জেলমুক্তি হয়েছে তাঁর। জেলমুক্তির পরই ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে ‘গৃহহীন’ আরাবুল ইসলাম। পঞ্চায়েত সমিতি থেকে তাঁর নেমপ্লেট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই খবর। সভাপতির ঘরে বর্তমানে রয়েছে সহ সভাপতি সোনালি বাছাড় এবং বিধায়ক শওকত মোল্লা ঘনিষ্ঠ খইরুল ইসলামের নাম। ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে আর যাবেন না আরাবুল, রাজনৈতিক মহলে এখন এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
আরাবুল তখন ভাঙড়ের বিধায়ক। ২০০৮ সালে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল বোর্ড গঠন করে। পঞ্চায়েত সমিতিতেই ছিল তাঁর অফিস। এর পর ২০১৩ সালে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন আরাবুল। তখন আরাবুলের ঘরের সামনে তাঁর নামফলক লাগানো হয়। ২০১৮ সালে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি হন। সেই সময় ওই ঘর ছাড়েননি। ২০২৩ সালে আবার সভাপতি হন আরাবুল। সেই অফিসেই বসছেন সহ সভাপতি সোনালি বাছাড়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় ভাঙড়ে আইএসএফ কর্মী খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল আরাবুলের। এবছর লোকসভা ভোটের আগে সেই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে ভাঙড়ের পুলিশ। এই গ্রেপ্তারি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা ভোটপর্বে আরাবুল ছিলেন জেলবন্দি। তাঁকে ভাঙড়ের আহ্বায়ক পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল। ভাঙড়ে চব্বিশের ভোট হয়েছে আরাবুল বিহীন, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লার নেতৃত্বে। যদিও অন্দরের খবর, আরাবুল-শওকতের মধ্যে সম্পর্ক বিশেষ ভালো নয়। জেলমুক্তির পরই আরাবুলের ‘গৃহহীন’ হয়ে যাওয়ার খবরে রাজনৈতিক মহলে জোর শোরগোল। যদিও শওকতের দাবি, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তবে কী শেষ হচ্ছে আরাবুল জমানা, তেমনই জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে। যদিও জেলমুক্তির পর রীতিমতো হুঙ্কার দিয়েছেন আরাবুল। “ভাঙড় কেউ কেড়ে নিতে পারবে না”, বলেই হুঁশিয়ারি তাঁর।