দলের কর্মী মেনেও জেসিবির সঙ্গে দূরত্বের চেষ্টায় হামিদুল
এই সময় | ০৪ জুলাই ২০২৪
এই সময়, কলকাতা ও চোপড়া: দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উষ্মার মুখে ব্যাকফুটে হামিদুল রহমান। চোপড়ায় যুগলের গণলাঞ্ছনার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত জেসিবি ওরফে তাজিমুল ইসলাম তাঁর ছত্রছায়ায় ছিল না বলে দাবি করলেন হামিদুল। জেসিবি'র বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যেও তাঁর ভূমিকা নেই বলে দাবি দাপুটে এই বিধায়কের। যুগলকে মারধরের ঘটনায় জেসিবি-সহ অভিযুক্তরা যাতে দ্রুত গ্রেপ্তার হয়, তার জন্যে তিনি পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন বলেও দাবি করেছেন হামিদুল।বিধানসভায় বুধবার একটি বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন চোপড়ার বিধায়ক। বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে তিনি বলেন, 'ওর (জেসিবি) বাড়ি থেকে আমার বাড়ি থেকে দশ কিলোমিটার দূরে। আমার জন্যে ও বেড়েছে, এমন নয়। ওর মাথায় আমার হাত ছিল না। আমার শেল্টারেও ছিল না। জেসিবি'র সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। ও বাইরে কাজ করত।'
তবে ওই বাহুবলী যে তৃণমূল করে, তা কবুল করেছেন চোপড়ার বিধায়ক। তাঁর কথায়, 'ও তৃণমূল করে, কিন্তু পার্টির লিডার নয়। জেসিবি'র শাস্তি হওয়া উচিত। যারা ওর সঙ্গে জড়িত তাদের কথা পুলিশকে ফোন করে বলা হয়েছে।' তৃণমূল সূত্রের খবর, চোপড়ার ঘটনা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া অবস্থান নেওয়ার পর হামিদুল তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরতে বাধ্য হয়েছেন। চোপড়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই জেসিবি'কে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
এই ঘটনায় আমিরুল ইসলাম ওরফে বুধুয়া নামে আরও একজনকে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে। বুধুয়ার বাড়ি চোপড়ার নাককাটি গ্রামে। ইসলামপুর এসিজেএম আদালতে বুধুয়াকে বুধবার হাজির করা হয়। সরকারি আইনজীবী সঞ্জয় ভাওয়াল বলেন, 'আগে ধৃত তাজিমুল ইসলাম ওরফে জেসিবি'কে জেরা করে আমিরুলের নাম পায় পুলিশ। বিচারক আমিরুলের ৫ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।'
জেসিবি'কে আগেই পাঁচ দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, শ্লীলতাহানি-সহ যে-যে ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ, সেই একই ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে আমিরুলকেও। জেসিবি'র বিরুদ্ধে আগেও যে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, তা বুধবার অস্বীকার করেননি হামিদুলও। চোপড়ায় এক সিপিএমকর্মী খুনের ঘটনায় জেসিবি'র দিকে আঙুল তুলেছিল বামেরা।
হামিদুলের কথায়, 'ওর বিরুদ্ধে ১২টা খুনের কেস রয়েছে অথবা ১৪টা। কিন্তু ওকে পুলিশ আগেও ধরেছে। ও জামিন পেয়েছে। এটা আইনি বিষয়।' যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, তাকে কেন দলের কর্মী করা হলো--এই প্রশ্নের অবশ্য জবাব দেননি বিধায়ক। তবে যুগলকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা যাতে ধরা পড়ে তার জন্যে তিনিই উদ্যোগী হয়ে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করেছেন বলে হামিদুলের বক্তব্য।
তাঁর কথায়, 'মহিলার অসম্মান হয়েছে, তার জন্যে আমি দুঃখপ্রকাশ করেছি। মহিলার চরিত্র নিয়ে কিছু বলিনি। মহিলা অন্যায় করেছেন, সেটাই বলেছিলাম। কেন অন্যায় করেছেন, তা গ্রামবাসীরা বলবেন। মারধর করাও অন্যায়।' তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর নির্দেশে জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল যে শো-কজের চিঠি দিয়েছেন, তার জবাব তিনি দেবেন বলেও জানিয়েছেন বিধায়ক। চোপড়ার ঘটনায় সংবাদমাধ্যম তাঁর প্রাথমিক বক্তব্যকে বিকৃত করেছে বলে দাবি হামিদুলের।