এই সময়: বিহার, ঝাড়খণ্ড, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানে আগেই হানা দিয়েছিল সিবিআই। এবার নিটের প্রশ্ন ফাঁসের তদন্তে সিবিআই এল বাংলাতেও। সিবিআই সূত্রের খবর, পরোক্ষে এ রাজ্যেরও যোগ রয়েছে নিট দুর্নীতির সঙ্গে। প্রশ্নফাঁসের অন্যতম মূল চক্রী হিসেবে চিহ্নিত, এখনও অধরা বিহারের নালন্দার সঞ্জীব মুখিয়ার গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত ঝাড়খণ্ডের অমিত কুমারের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে নিউ টাউনে।অ্যাকশন এরিয়া ৩-এর একটি অভিজাত আবাসনের সেই ফ্ল্যাটেই সিবিআই অফিসাররা হানা দিলেন বুধবার। অমিতের টিকির নাগাল বুধবার রাত পর্যন্ত অবশ্য পাওয়া যায়নি। এদিন দুপুরের দিকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে করে নিউ টাউনে পৌঁছয় তদন্তকারীদের একটি দল। কিন্তু ফ্ল্যাটটি তালাবন্ধ ছিল। তাই এলাকা থেকেই একজন তালা খোলার মিস্ত্রিকে ডেকে আনা হয়। তদন্তকারীরা কথা বলেন আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী ও অন্য আবাসিকদের সঙ্গে।
জানা যায়, ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা অমিত মাঝেমধ্যেই এই ফ্ল্যাটে আসে। গত মাসেও এসেছিল। ঘণ্টা তিনেক তল্লাশির পর ফ্ল্যাটটি সিল করে দিয়ে সিবিআইয়ের অফিসাররা ফিরে যান। আজ, বৃহস্পতিবার ফের সেখানে যেতে পারেন তদন্তকারীরা। অর্থাৎ স্পষ্ট, বিহার, ঝাড়খণ্ডের পাশাপাশি বাংলাতেও অমিত কুমারের সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাবে সিবিআই।
নিটের প্রশ্ন ফাঁসের তদন্তে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চক্রী ধরা পড়েছে বিহার থেকে। তার পরেই রয়েছে গুজরাট ও মহারাষ্ট্র। দেরাদুন ও উত্তরপ্রদেশেরও দু’জন গ্রেপ্তার হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত। এর মধ্যে ৭ জনকে সিবিআই গ্রেপ্তার করে। বাকিদের বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মহারাষ্ট্র ও গুজরাট থেকে গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশ।
তবে এখনও হন্যে হয়ে খোঁজ চলছে সঞ্জীব মুখিয়ার। সন্দেহ, সে নেপালে পালিয়ে যেতে পারে। তার বেশ কয়েক জন শাগরেদকে অবশ্য ধরা হয়েছে। গত ৫ মে নিট-ইউজি পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা শুরুর আগেই পাটনার একটি পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে থেকে আধপোড়া একটি প্রশ্নপত্র উদ্ধার হয়। সূত্র মারফত খবর পেয়ে চার পরীক্ষার্থী-সহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে বিহার পুলিশ।
কয়েক দিনের মধ্যেই বিহার পুলিশের আর্থিক অপরাধদমন শাখা জানিয়ে দেয়, বিপুল টাকার বিনিময়ে নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়েছে। পরে নিট নিয়ে আরও গুচ্ছ অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। রেজ়াল্ট বেরোনোর পর দেখা যায়, বেনজির ভাবে ৭২০-র পূর্ণমান পেয়ে ৬৭ জন প্রথম স্থান পেয়েছেন।
এর মধ্যে ৬ জন গ্রেস মার্ক পেয়েছিলেন। মোট ১৫৬৩ জন গ্রেস মার্ক পান। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাঁদের জন্য রি-নিট পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। রি-নিটে অবশ্য বসেন ওই ৬ জন-সহ মাত্র ৮১৩ জন।