• লেক গার্ডেন্সে গেস্ট হাউসে প্রেমিকাকে গুলিকাণ্ডে উদ্ধার গোপন চিঠি, উঠে আসছে 'ত্রিকোণ প্রেম'
    আজ তক | ০৪ জুলাই ২০২৪
  • লেক গার্ডেন্সের গেস্ট হাউসে গার্লফ্রেন্ডকে গুলি করে আত্মহত্যার ঘটনায় নয়া মোড়। সূত্রের দাবি, ওই যুবতী অন্য এক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। সেই রোষ থেকেই গুলি চালান রাকেশ শাহ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবতীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ এই তথ্য পেয়েছে। 

    সূত্রের দাবি,  রাকেশের ব্যাগ থেকে একটি চিঠি উদ্ধার হয়েছে। সেই চিঠি থেকে একাধিক তথ্য সামনে এসেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, গুলি চালানোর পরিকল্পনা নিয়েই গেস্ট হাউসে এসেছিলেন রাকেশ। তিনি পরিকল্পনা করেই গার্লফ্রেন্ডকে ডেকে এনেছিলেন। 

    বুধবার দুপুর। লেক গার্ডেন্সের ওই গেস্ট হাউসে যান বজবজের বাসিন্দা রাকেশ কুমার শাহ। বছর ছাব্বিশের ওই যুবকের সঙ্গে ছিল তাঁর গার্লফ্রেন্ডও। দুজনের বাড়িই বিদ্যাসাগর রোড এলাকায়। দুপুর আড়াইটা নাগাদ গেস্ট হাউসে চেক ইন করার পর বিকেল ৫ টা নাগাদ গেস্ট হাউসের রিসেপশনে ছুটে আসেন যুবতী। জানায়, তাঁকে গুলি করা হয়েছে। গেস্ট হাউসের স্টাফরা তখন তড়িঘড়ি সেই যুবতীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তারমধ্যেই গেস্ট হাউসের ঘর থেকে আবার গুলির শব্দ আসে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ওই যুবক নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছে। 

    ঘটনাস্থলে যান পুলিশের একাধিক আধিকারিক। তাঁদের তরফে গেস্ট হাউসের স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জখম যুবতীর কাছ থেকেও স্টেটমেন্ট নেয় পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই যুবতী তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে রাকেশের সম্পর্ক ছিল। তবে রাকেশ তাঁকে ইদানিং সন্দেহ করত। তাঁকে কার্যত জোর করেই গেস্ট হাউসে এনেছিলেন রাকেশ। 
       

    ওই যুবক ও যুবতীর যেখানে বাড়ি সেখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। সেটা সবাই জানত। মেয়েটির বাবা মিলে কাজ করত। দুই বোন, এক ভাই, বাবা-মা বাড়িতে থাকত। তবে ৩০ জুন মেয়েটির বাবা-মা এবং এক বোন তাদের গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। কয়েকদিন ধরেই রাকেশের সঙ্গে যুবতীর মনোমালিন্য চলছিল। তা নিয়ে অশান্তিও সম্ভবত হয়েছিল দুজনের। তারপরই তাঁরা কলকাতার গেস্ট হাউসে আসেন। 

    এদিকে গেস্ট হাউসে তল্লাশি চালায় পুলিশ। সেখানে মৃত যুবক রাকেশের ব্যাগ থেকে একটি চিঠি টাইপের কাগজ উদ্ধার হয়। গেস্ট হাউসের এক ব্যক্তি জানান, পুলিশ সুইসাইড নোট উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। দুজনের মধ্যে অশান্তি চলছিল বলে আমরা শুনলাম। 

    চিঠিতে কী লেখা ? পুলিশ সূত্রে খবর, গতকাল যুবতীর সঙ্গে কথা বলার পরও খুনের মোটিভ নিয়ে পুলিশ বেশ সন্দিহান ছিল। তবে চিঠি হাতে পাওয়ার পর পুলিশ কার্যত নিশ্চিত ওই যুবতীর সঙ্গে অন্য কারও সম্পর্ক ছিল। আর তা জানতে পেরেই প্রেমিকাকে খুনের পরিকল্পনা করে রাকেশ। তার লেখা নোটের ছত্রে ছত্রে একথার প্রমাণ রয়েছে। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করছে, ইদানিং প্রেমিকাকে সহ্য করতে পারতেন না রাকেশ। তাঁর প্রতি বিদ্বেষ ছিল। কারণ ওই যুবতী অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন বলে সন্দেহ করতেন রাকেশ। এই বিষয়ে তিনি বোঝানোর চেষ্টাও করেন প্রেমিকাকে। তবে কাজ হয়নি। তারপর থেকেই রাকেশ আতঙ্কে থাকতেন। প্রেমিকা তাঁকে ছেড়ে চলে যেতে পারে বলেও মনে করতেন। 

     তবে কার সঙ্গে যুবতী প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তা এখনও জানা যায়নি। পুলিশ সেই ব্যক্তিকে খোঁজার চেষ্টা করছে। রাকেশ কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেলেন তাও জানা যায়নি। তদন্তকারীরা রাকেশের ও যুবতীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন। 
     
  • Link to this news (আজ তক)