• বছর তিনেক পরে ফের শহরে কলেরার হানা, জল ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ
    এই সময় | ০৫ জুলাই ২০২৪
  • প্রায় ৩ বছর ফের শহরে কলেরার হানা। বিধাননগর পুরসভার অন্তর্গত ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে এক ব্যক্তি কলেরা আক্রান্ত হয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হন। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পান। একই উপসর্গ নিয়ে তাঁর মা হাসপাতালে ভর্তি। ইতিমধ্যে রোগীর আবাসনে গিয়ে জলের নমুনা সংগ্রহ করেছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।বাগুইআটি জ্যাংড়া এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দা বছর পঁয়ত্রিশের প্রবীর সেন কলেরা রোগে আক্রান্ত হন। সোমবার তাঁর মল পরীক্ষা করা হলে কলেরার ভিব্রিও কলেরি ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। রবিবার তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন, তবে একই উপসর্গ থাকায় তাঁর মা সরস্বতী সেনকেও বৃহস্পতিবার বেলেঘাটা আইডি-তে ভর্তি করা হয়েছে।

    রবিবার সকাল থেকেই প্রবীর সেনের পেট ব্যাথা, বমি এবং ডায়েরিয়া শুরু হয়। শরীরে মারাত্মক জলশূন্যতা হওয়ায় সোমবার ভোররাতে তাঁকে আইডি-তে ভর্তি করা হয়। উপসর্গ দেখেই চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়, তিনি সম্ভবত কলেরায় আক্রান্ত। এরপরেই পরীক্ষার জন্য মলের নমুনা পাঠানো হয় আইডি চত্বরেই অবস্থিত ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন (পূর্বতন নাইসেড)-এ। সেখানেই মল পরীক্ষা করা হলে ভিব্রিও কলেরি ব্যাক্টেরিয়ার অস্বিস্ত মেলে নমুনায়। সঙ্গে সঙ্গেই ওই ব্যক্তির কলেরার চিকিৎসা শুরু হয় হাসপাতালে। অবস্থার উন্নতি হলে বুধবার তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়। কিন্তু এরই মধ্যে তাঁর মায়েরও বমি, পেট ব্যথা ও প্রবল ডায়েরিয়া দেখা দেওয়ায় তাঁকেও এদিন আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

    প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, পয়ঃপ্রণালীর জল কোনওভাবে মিশেছে পানীয় এবং স্নান ও অন্যান্য ব্যবহারযোগ্য জলে। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হতে নাইসেডের প্রতিনিধিরা প্রবীরদের আবাসনে গিয়ে এদিন বিভিন্ন জলের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। আশপাশ থেকেও নুমনা সংগ্রহ করা হয় হয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অবশ্য জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এর আগে ২০১৯ এবং ২০২১ সালে কলকাতায় কয়েকজন কলেরা আক্রান্ত হন। বর্ষায় জলবাহিত এই সংক্রমণের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের জল ফুটিয়ে খাওয়ার পরমার্শ দেওয়া হয়েছে।

    স্থানীয় কাউন্সিলর সুজিত মণ্ডল বলেন, ‘একই পরিবারে ছেলেটি কলেরা আক্রান্ত হয়েছেন। মা’র একই উপসর্গ দেখা গিয়েছে। তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্স করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।’ কাউন্সিলর জানান, ওই পরিবার সাবমারসিবল পাম্প ব্যবহার করে ভূগর্ভস্থ জলকেই পানের জন্য ব্যবহার করেন। সেখান থেকেই কোনওভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে গিয়েছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদেরও কিছুটা ভয় লাগছে, আমাদের পরিবারের কারও আবার এরকম সংক্রমণ না হয়। চিন্তা তো একটা রয়েছেই।’
  • Link to this news (এই সময়)