১৯৬৪ সাল। বার্মায় বসবাসকারী বেশ কিছু মানুষ নিজেদের ভিটে ছেড়ে চলে আসেন এই দেশে। ঠাঁই হয় উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটে। সেই থেকে টানা ৬০ বছর স্থায়ী ঠিকানা পাননি তাঁরা। বসিরহাটের সেই নির্দিষ্ট জায়গাটির নাম হয় বার্মা কলোনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এবার তাঁরাও পেতে চলেছেন জমির পাট্টা।প্রায় ৬০ বছরের বসবাসকারী ৪৪টি পরিবার পাট্টা পেতে চলেছে। বসিরহাট পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বসবাস করে ওই ৪৪টি পরিবার। দীর্ঘদিন বসবাস করার পরে ওই এলাকা থেকে ‘বার্মা কলোনি’ হিসেবেই পরিচিতি ছিল এতদিন। ছিল না স্থায়ী ঠিকানা। নেই মাথার উপর ছাদ। সঠিক পরিচয় পত্র না থাকার কারণে সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন তাঁরা।
প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার পরেও সুরাহা হয়নি। সরকার আসে যায়। কিন্তু তাঁদের কোনও স্থায়ী ঠিকানা হয় না। বিগত সরকারের সময় রাজ্য-কেন্দ্র একাধিকবার এই উদ্যোগ নিলেও কোনও সমাধান মেলেনি। একরাশ হতাশায় খোলা আকাশের নিচে বসবাস করে জীবন-যাপন চলছিল প্রায় ২০০ বার্মা সম্প্রদায়ের মানুষের। ২০২৪-এ লোকসভার ভোটের আগে বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দোপাধ্যায় প্রচারে যান ওই এলাকায়। সেই সময় তাঁর কাছে এই বিষয়টা জানান বার্মা কলোনির বাসিন্দারা।
তখনই তিনি কথা দিয়েছিলেন বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের উদ্যোগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শাসক দফতর ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা এসে সরেজমিনের খতিয়ে দেখেন পুরো বিষয়টি। যাতে আগামী দিন এই ৪৪ টি পরিবার সঠিক পরিচয় পত্র ও জমির পাট্টা পান সে ব্যাপারে অবশেষে আশ্বাস দেওয়া হয়। সবরকম ব্যবস্থা ইতিমধ্যে প্রশাসনিকভাবে শুরু করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের কর্তারা সহ বসিরহাটে দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়, কাউন্সিলর কৌশিক দত্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর আশ্বাস দেন খুব শীঘ্রই জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হবে বার্মা কলোনির বাসিন্দাদের হাতে। রীতিমতো খুশি বার্মা কলোনির বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে আমরা বসবাস করি সরকারি কোনও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমাদের কোনও স্থায়ী ঠিকানা না থাকার ফলে সঠিক পরিচয় পত্র আমাদের নেই। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় ৭০ বছর ধরে আমরা বসবাস করছি মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই উনি যেভাবে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন আমরা নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছি।