পরিবেশ দূষণ কমানোর পাশাপাশি সরকারি কোষাগারের রাজস্ব বাঁচাতে এবার সোলার প্যানেল ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে লালবাজার। বছর তিনেক আগে পাইলট প্রজেক্টে আলিপুর থানায় সোলার প্যানেল বসিয়ে ইলেক্ট্রিক বিলের খরচ কমানোর ‘স্বাদ’ পেয়েছিলেন পুলিশকর্তারা। তার পরে বডিগার্ড লাইন্স সহ আরও কয়েকটি অফিসে সোলার প্যানেল বসানো হলেও, সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারে তেমন তৎপরতা চোখে পড়ছিল না পুলিশ মহলে।সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি অফিসে বিদ্যুতের খরচ কমানোর নির্দেশ দেওয়ার পরেই সোলার প্যানেল লাগাতে তৎপরতা শুরু করেছে লালবাজার। বছর খানেকের মধ্যে সমস্ত অফিস, কোয়ার্টার, ব্যারাকে সোলার প্যানেল ইনস্টল করতে চাইছে তারা। এমনকী, যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ডেও খুব শীঘ্রই সোলার প্যানেল লাগানো হবে।
কলকাতা পুলিশের থানাগুলিতে ২৪ ঘণ্টাই অফিসার-কর্মীরা থাকেন। ফলে সারাদিন পাখা, এসি ব্যবহার হয়ে থাকে। কমবেশি প্রতিটি থানাকে এক লাখ টাকা বিদ্যুতের বিল দিতে হয় বলে সূত্রের খবর। ব্যারাকগুলিতে খরচ আরও বেশি। লালবাজার সূত্রে খবর, এজন্য বছরে প্রায় ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা খরচ হয়। এই বিপুল খরচে লাগাম টানতে ‘গ্রিন এনার্জি’ ব্যবহার করতে চান পুলিশকর্তারা।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে আলিপুর থানায় ১০টি সোলার প্যানেল লাগানো হয়। তাতে প্রতি ঘণ্টায় সাড়ে চার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রতিটি থানাতে একই ফর্মূলায় বিদ্যুৎ বাঁচানো যেতে পারে বলে মনে করছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম নগরপাল (সংগঠন) অজয় প্রসাদ বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ বাঁচানোর জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করছি। যাদবপুর ট্র্যাফিক গার্ডে সোলার প্যানেল লাগানো হবে খুব শীঘ্রই। এর পর একে একে সব অফিসে বসবে।’
লালবাজারের এক পুলিশকর্তার প্রশ্ন, ‘আমাদের বাড়িতে কেউ না থাকলে পাখা, লাইট কিংবা এসি চলে না, তাহলে সরকারি দপ্তরেও তা হওয়ার কথা নয়। অনেক আগে থেকেই খরচ কমানোর নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’ সম্প্রতি লালবাজারের তরফে থানাগুলির জন্য একটি এসওপি জারি হয়েছে। তাতে এলইডি লাইট ব্যবহারের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১ বছরের মধ্যে পুরোনো বাল্ব বদলে এলইডি লাইট ব্যবহার করতেও বলা হয়েছে। অফিসে কর্মীরা না থাকলে লাইট, এসি বন্ধ রাখতে নির্দেশ গিয়েছে। এই নির্দেশ যে শুধু কথার কথা নয়, তা স্পষ্ট করতে থানা এবং ব্যারাকে প্রতিমাসের ইলেক্ট্রিক বিল রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুগ্ম নগরপাল (সংগঠন) নিজেই।