মেয়ের মৃত্যুর মাসেই আত্মঘাতী বাবা-মা? বারাসতে দম্পতির দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য
এই সময় | ০৫ জুলাই ২০২৪
এক বছর আগে জুলাই মাসেই প্রেমে আঘাত পেয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন মেয়ে। একমাত্র সন্তানকে হারানোর শোক কিছুতেই ভুলতে পারছিলেন না বাবা-মা। তাই মেয়ের মৃত্যু বার্ষিকীর মাসেই চরম পদক্ষেপ তাঁদের! উদ্ধার হল ওই প্রবীণ-প্রবীণার পচা-গলা দেহ। ঘটনার জেরে জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে বারাসত পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সপ্তর্ষিনগরে।প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন ধরে একমাত্র মেয়ে অনন্যা মণ্ডলকে নিয়ে ওই এলাকাতেই বসবাস করতেন মৌসুমী এবং রঞ্জন মণ্ডল। এক বছর আগে আত্মঘাতী হন বছর ২০-র অনন্যা। এরপর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন মণ্ডল দম্পতি।
শুক্রবার তাঁদের বাড়ির সামনে থেকে দুর্গন্ধ পান প্রতিবেশীরা। এরপরেই তাঁদের সন্দেহ হয়। এরপরেই খবর দেওয়া হয় বারাসত থানায়। পুলিশ এসে দরজা খুলে ওই দম্পতির পচাগলা দেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের সন্দেহ, মেয়ের মৃত্যুর মাসেই আত্মঘাতী হন মণ্ডল দম্পতি। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসার পরেই মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে বলা সম্ভব হবে বলে জানাচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মৌসুমী এবং রঞ্জন প্রতিবেশীদের বলেছিলেন তাঁরা তারাপীঠে যাচ্ছেন পুজো দিতে। যাতে কেউ তাঁদের কোনও খোঁজ না নেন সেই কারণেই কি এই গল্প ফেঁদেছিলেন তাঁরা? উঠছে প্রশ্ন। প্রতিবেশীদের আরও দাবি, একমাত্র মেয়ের মৃত্যুর পরেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তাঁরা। কথায় কথায় ডুকরে কেঁদে উঠতেন। বেঁচে থাকা অর্থহীন, এই মন্তব্যও শোনা গিয়েছিল তাঁদের কণ্ঠে।
তাঁদের কথায়, ‘এক বছর আগে এই মাসেই মৌসুমী এবং রঞ্জনের একমাত্র মেয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। প্রেমের সম্পর্কে জটিলতার কারণেই এই চরম পদক্ষেপ নেয় সে। এরপর থেকেই তাঁর বাবা-মা ভেঙে পড়েছিলেন। কয়েকদিন আগেই মৌসুমী এবং রঞ্জন জানিয়েছিলেন, তাঁরা তারাপীঠে পুজো দেবেন। তাই ওদের বাড়ি বন্ধ দেখে আমরা আলাদা করে আর খোঁজ খবর করিনি। তবে এই ধরনের কোনও ঘটনা ওরা ঘটাতে পারে, তা স্বপ্নেও ভাবিনি।’
পুলিশ সূত্রে খবর, মণ্ডল দম্পতির বাড়ি থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে। তবে এই নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। পুলিশের অনুমান, মেয়ের মৃত্যু শোক সামলাতে না পেরেই এই পদক্ষেপ করেছেন মণ্ডল দম্পতি। তবে গোটা বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া।