• ঘুমের মধ্যেই পুড়িয়ে হত্যার চক্রান্ত, মৃত্যু মা ও শিশুর, আশঙ্কাজনক বাবা
    এই সময় | ০৫ জুলাই ২০২৪
  • রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তিন জনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ। আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে মা, ছেলের। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে বোলপুর থানার রায়পুরের সুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন গীত গ্রামে।জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়াদাওয়া করে একতলা বাড়িতে জানলা খুলে ঘুমোচ্ছিলেন আব্দুল আলিম(৩৮), তাঁর স্ত্রী কেরিমা বেগম (৩০) এবং ছোট ছেলে আয়ান শেখ (৪)। অভিযোগ, সেই সময় কেউ জানালা দিয়ে কেরোসিন ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাঁদের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা।

    আগুনে তাঁরা ঝলসে গিয়েছিলেন বলে দাবি স্থানীয়দের। এদিকে বাবা-মা-ভাইয়ের চিৎকার শুনে পাশের কামরা থেকে দৌড়ে আসেন বাড়ির বড় ছেলে রাজও। কান্না জড়ানো গলায় তাঁর বক্তব্য, 'এসে দেখলাম সকলেই পুড়ে গিয়েছে। কাউকে বাঁচাতে পারলাম না।' এদিকে গ্রামের লোকজনরাই এই তিন জনকে প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এরপর তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে প্রথমে আয়ানের মৃত্যু হয়। এরপর হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কেরিমা বেগম। আব্দুল আলিমের অবস্থাও ভালো নয় বলেই জানাচ্ছেন পরিজনরা।

    স্থানীয়দের দাবি, বাড়ির কাছে একটি মশাল উদ্ধার হয়েছে। কেরিমা বেগমের ভাই বলেন, 'আমার কাছে রাতেই খবর আসে। আমি ছুটে বোনের বাড়িতে গিয়ে দেখি বোন, জামাইবাবু, ভাগ্না পুড়ে গিয়েছে। ওদের গা থেকে কেরোসিনের গন্ধ বেরোচ্ছিল। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে আমি জানি না। আমার জামাইবাবু রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তবে ব্যবসা করতেন। কোনও ব্যবসায়িক শত্রু এই কাণ্ড ঘটিয়েছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখার দাবি জানাচ্ছি।' আব্দুল আলিমের শারীরিক পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক বলেই সূত্রের খবর।

    আব্দুল আলিমের মামা বলেন, 'আমার ভাগ্ন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আমি যাওয়ার পরেও খাট জ্বলছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম শর্ট সার্কিট হয়েছে। পরে দেখলাম এসি, ফ্যান কোথাও কিছু হয়নি। খাট থেকে তেলের গন্ধ পেয়েছিলাম।'

    খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনাস্থলে যায় বোলপুর থানার পুলিশ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় এলাকায় শোরগোল পড়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এই ঘটনায় বীরভূমের পুলিশ সুপার রাজ নারায়ণ মুখোপাধ্যায় জানান, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি। গোটা ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।
  • Link to this news (এই সময়)