• ব্যারাকপুর কমিশনারেটের হাতে সুবোধের রাইট হ্যান্ড
    এই সময় | ০৫ জুলাই ২০২৪
  • এই সময়, ব্যারাকপুর: সিআইডি আগেই হেফাজতে নিয়েছে সুবোধ সিংকে। এ বার বিহারের বেউর জেলে বন্দি সুবোধের ডান হাত রোশন কুমার যাদবকে হাতে পেল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। সুবোধের মতোই ব্যবসায়ীকে ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রোশনের বিরুদ্ধে। ব্যবসায়ী তাপস ভগৎকে ফোনে হুমকির তদন্তে প্রোডাকশান ওয়ারেন্ট দেখিয়ে রোশনকে গ্রেপ্তার করেছে ব্যারাকপুর পুলিশ। রোশনের নাম মণীশ শুক্লা খুনেও জড়িয়েছিল।১৫ জুন বেলঘরিয়ায় বিটি রোডের উপর ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। গাড়িতে বুলেটপ্রুফ কাচ থাকায় প্রাণে বেঁচে যান অজয়। সেদিনই যখন থানায় বসে অজয়, তখন তাঁর মোবাইলে হুমকি ফোন আসে। একই দিনে ব্যারাকপুরের আর এক ব্যবসায়ী তাপস ভগতের কাছেও হুমকি ফোন আসে। ১৮ জুন টিটাগড় থানায় ভগৎ অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে উঠে আসে তাপসকে প্রথম হুমকি ফোনটি করেছিল রোশনই। পরের দিন অবশ্য সুবোধ সিংয়ের নাম করে ফোন আসে।

    দেখলে মনে হবে হিন্দি সিনেমার নায়ক। বয়স মাত্র ২২ বছর। ছিপছিপে চেহারার সুপুরুষ রোশনের নামের সঙ্গে জড়িয়ে একের পর এক অপরাধ। বৃহস্পতিবার এ হেন রোশনকে ব্যারাকপুর আদালতে হাজির করার আগে কোর্ট চত্বরে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। পুলিশ ১৪ দিনের হেফাজত চেয়ে আবেদন করে। বিচারক তা মঞ্জুর করেছেন।

    সুবোধকে অন্য মামলায় সিআইডি হেফাজতে নিলেও তাঁকে নিজেদের হেফাজতে পেতে চাইছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। তার আগে গ্যাংস্টারের ডান হাতকে হেফাজতে নিয়ে তদন্তের গতি বাড়াতে চাইছে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডিবিধির ৩৮৪ ধারায় টাকা চাওয়া, ৩৮৭ ধারায় ভয় দেখানো, ৫০৬ ধারায় হুমকি এবং ৩৪ আইপিসি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।

    বিহারের বৈশালী জেলার ভগবানপুরের বাসিন্দা রোশনের কিশোর বয়সেই অপরাধে হাতেখড়ি। এফআইআরে নাম না থাকলেও ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর টিটাগড়ে মণীশ শুক্লা খুনে শার্প শুটার হিসেবে তার নাম জড়িয়েছিল। সিআইডি তাকে গ্রেপ্তারও করে। তখন অবশ্য সে নাবালক ছিল। কিছু দিন এ রাজ্যে থাকার পর বিহারের অন্য একটি মামলায় সেখানকার পুলিশ রোশনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।

    ২০২১ সালের পর থেকে বেউর জেলেই সে বন্দি ছিল। মণীশ খুনের পর থেকেই রোশন সুবোধের কাছাকাছি এসেছিল বলে খবর। পুলিশ সূত্রে খবর, সুবোধের এতটাই বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছিল যে তার হয়ে কোথায় কারা কোন দিন কী অপারেশন করবে সেই রুটম্যাপ ছকে দিত এই রোশন।

    এ বার একদিকে তাপস ভগৎকে ফোনে হুমকি, অন্য দিকে মণীশ খুনের তদন্তও নতুন করে খোলা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যেমনটি চেয়ে পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়াকে সম্প্রতি চিঠি দিয়েছেন নিহত মণীশের বাবা চন্দ্রমণি শুক্লা।

    উল্লেখ্য, অজয় মণ্ডলের গাড়িতে গুলি এবং তাঁকে হুমকি ফোনের ঘটনায় আগেই বিহার থেকে ব্যারাকপুর পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল সাহিল কুমার পাসোয়ান, অঙ্কিত পাসোয়ান এবং রাহুল কুমারকে। বৃহস্পতিবার ফের তাঁদের ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
  • Link to this news (এই সময়)