এই সময়, বর্ধমান: সরকারি জমির দখল রুখতে প্রশাসনকে কড়া হাতে মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সরকারি জমিতে রেশন ডিলারদের অফিসের উদ্বোধনে প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিতর্ক দেখা দিয়েছে বর্ধমানে।বড়শুলে বর্ধমান-২ ব্লকের বিডিও অফিস চত্বরে এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের অফিসের উদ্বোধন হয় গত সোমবার। রেশন ডিলারদের এই অফিস উদ্বোধন করেন অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক তথা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিক। উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাখি কোনার, বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস-সহ প্রশাসনের আরও অনেকে।
উদ্বোধক হিসেবে ফলকে নাম রয়েছে পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি ও যুগ্ম বিডিও-র। জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতির নিজস্ব জমির উপর অফিসঘরটি নিজেদের টাকায় তৈরি করেছে রেশন ডিলারদের ওই সংগঠন। অফিসটির রং করা হয়েছে নীল-সাদা। প্রশ্ন উঠেছে, বেসরকারি ওই সংগঠনের অফিস সরকারি জমিতে কী ভাবে তৈরি হলো?
এর উদ্বোধনে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি আধিকারিকদের উপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। জেলা বিজেপির সহ সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্রর বক্তব্য, ‘মুখ্যমন্ত্রী মুখে এক কথা বললেও, তাঁর দলের লোকেরা অন্য কাজ করছেন। এই ঘটনা তার বড় প্রমাণ। অফিসটির উদ্বোধনেও বিডিও, এমএলএ সবাই হাজির ছিলেন।’
বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিকের বক্তব্য, ‘এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ওই জায়গায় দীর্ঘদিন ধরেই বৈঠক করতেন। সেখানেই একটি অফিস করা হয়েছে। সোমবার তারই উদ্বোধনে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।’ যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটে থাকলে অন্যায় হয়েছে। আমরা খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ডিপার্টমেন্টে জানাব।’
এদিকে, অফিসটি তৈরি হওয়া নিয়ে দু’ধরনের বক্তব্য সামনে এসেছে। বর্ধমান-২ ব্লকের বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস বলছেন, ‘জমি পঞ্চায়েত সমিতির। এমআর ডিলার্স অ্যাসোয়িয়েশনকে কার্যালয় নির্মাণের জন্য জমিটি ভাড়া দিয়েছে তারা।’ কিন্তু অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক পরেশ হাজরার দাবি, ‘আমরা খাদ্য দপ্তরের একটি অংশ। সরকারি লাইসেন্স নিয়ে কাজ করি। কোনও সরকারি জায়গা দখল করে বসিনি। খাদ্য দপ্তরের পাশে জায়গাটি আমাদের বিনা ভাড়ায় দেওয়া হয়েছে। কোনওরকম লিজ় বা আর্থিক লেনদেন নেই।’