শেখর চন্দ্র, আসানসোল: ‘রেলকম ঝমাঝম পা পিছলে আলুর দম’। আসানসোলের গড়াই রোডে চলতে গিয়ে এই ছড়ায় মনে পড়ছে শহরবাসীর। আসানসোল শহরের লাইফলাইন শশীভূষণ গড়াই রোড। লোকমুখে এই রাস্তা এসবি গড়াই রোড নামে পরিচিত। এ রাস্তায় চলতে গিয়ে বিপদের মুখে পড়ছেন পথ চলতি মানুষ। বাড়ছে দুর্ভোগ। আকছাড় ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রশাসনকে জানিয়ে লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
শহরের এই রাস্তাই এখন যেন মৃত্যুফাঁদ! কিছু দিন আগে রাস্তা চিরে মাঝখান দিয়ে পাতা হয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল অর্থাৎ বিদ্যুতের তার। সেই কাজ মিটে গেলেও রাস্তা সংস্কার করা হয়নি। খানাখন্দে ভরেছে রোড। সামান্য বৃষ্টিতেই সেই গর্তে জল জমছে। বুঝতে না পেরে গর্তে পড়ছেন গাড়ি চালকরা। নরম মাটিতে ঢুকে যাচ্ছে গাড়ির চাকা। এঁটেল মাটিতে ভরেছে রাস্তা। পিছলে পড়ছেন পথচারীরাও। দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন স্কুল-কলেজ-পড়ুয়া, রোগী, অফিস যাত্রী থেকে নিত্যযাত্রীরা।
অথচ শশীভূষণ গড়াই রোডের (SB Gorai Road) দুপাশে মোট ১৪ টি স্কুল, একটি কলেজ, জেলা হাসপাতাল, আদালত-সহ নানা গুরুতপূর্ণ অফিস-কাছারি রয়েছে। ৬ কিমির এই রাস্তায় স্কুল-অফিস চালু ও ছুটির সময়ে এমনিতেই বেশ যানজট হয়। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো বেহাল দশা ভোগাচ্ছে পথচলতি মানুষকে। পুরোদমে বর্ষা শুরুর আগে এই দশা। বর্ষা শুরু হলে কী হবে তা ভেবে আতঙ্কে ভুগছেন শহরবাসী। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুর প্রশাসনকে বারবার সংস্কারের দাবি জানিয়ে কিছু লাভ হয়নি। মিলেছে শুধু আশ্বাস।
ঘটনায় রাজনৈতিক রং লাগতে সময় লাগেনি। বেহাল এই রাস্তা নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরাও। তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী রাস্তার দুপাশে হকার উচ্ছেদ নিয়ে যতটা ব্যস্ত রাস্তার সংস্কার নিয়ে ততটাই উদাসীন। শহরের এই রাস্তাটি এতটা বেহাল ছিল না। প্রশাসনের গাফিলতিতে এই রাস্তাটি বেহাল হয়েছে।
আসানসোল পুরনিগমের (Asansol Municipal Corporation) মেয়র বিধান উপাধ্যায় ঘটনার দায় চাপিয়েছেন বিদ্যুৎ দপ্তরের ঠিকা সংস্থার উপর। মেয়রের দাবি, রাস্তা মেরামতির জন্য ৭ কোটি টাকার মতো বাজেটের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ওই সংস্থা মাত্র ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা দিয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, সিদ্ধান্ত হয়েছিল রাস্তার একদিক থেকে কাজ করা হবে। রাস্তায় একটি দিক খুঁড়ে তার বসানোর পর মেরামত হবে। সেই কাজ মিটে গেলে অন্যদিকের কাজ করা হবে। কিন্তু ওই সংস্থা একসঙ্গেই পুরো রাস্তা খুঁড়ে বেহাল অবস্থা তৈরি করেছে। যত শীঘ্র সম্ভব গড়াই রোড সংস্কার করার চেষ্টা করা হবে।