চলতি বছরে দিঘায় রথযাত্রা হচ্ছে না। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একথা জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছু কাজ বাকি থাকার জন্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে, দিঘা জগন্নাথ মন্দির কবে উদ্বোধন হবে, সেই নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও ঘটনা করা হয়নি। তবে, দিঘা পুরনো জগন্নাথ মন্দিরে এতদিন রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হত। পুরনো দিঘা জগন্নাথ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বসন্ত কুমার জানা জানিয়েছেন, পুরনো মন্দিরেও এবার রথটানা হবে না। তবে নয় দিন ব্যাপী যা আচার-অনুষ্ঠান, পূজা-পাঠ, প্রসাদ বিতরণ সহ সমস্ত কর্মকাণ্ড অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারেও হবে।দিঘা নব নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দিরের কাছেই রথযাত্রার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। ওড়িশা থেকে দক্ষ কারিগর এনে রথ নির্মাণ কাজ শুরু হয় কিছুদিন আগেই। সেই কাজ প্রায় শেষের পথে। তবে, এদিন এক্স হ্যান্ডেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দিঘায় রথযাত্রা পরের বছর থেকে পালিত হবে। কিছু কাজ এখনও শেষ হয়নি। পরের বছর থেকে রথযাত্রা শুরুর আগেই তা সম্পূর্ণ হওয়া জরুরি।’ তিনি এও বলেন, ‘দীঘার রথযাত্রা পূর্ণ শ্রদ্ধা ও গাম্ভীর্যের সঙ্গে পালন করা হবে। সেখানে সবাই আমন্ত্রিত হবেন। ভারতের আরও একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ স্থান দিঘা প্রভুর আবাসস্থল হিসেবে আবির্ভূত হবে।’
যদিও, দিঘায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের কাজ এখনও সম্পূর্ণ রূপে শেষ হয়নি। ইতিমধ্যে রাজস্থানের বংশী পাহাড়পুর থেকে জগন্নাথ, বলরাম ও শুভদ্রার মূর্তি নিয়ে আসা হয়েছে। সেগুলির মোড়ক এখনও খোলা হয়নি। মন্দিরের অন্দরসজ্জার কাজ শেষ হওয়ার পরেই মূর্তিগুলি উন্মোচন করা হবে বলেই খবর। তবে, মন্দিরের দরজা সর্বসাধারণের জন্য খুলবে কবে? সে ব্যাপরে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না জেলা প্রশাসনের কর্তারাও।
তবে, রথ নির্মাণের প্রস্তুতি চলছিল এবার জোরকদমে। নব নির্মিত মন্দিরের কাছেই এই তিনটি রথ নির্মাণের কাজ শুরু হয় কয়েকমাস আগে থেকেই। প্রতিটি রথের উচ্চতা প্রায় ১৫ ফুট। একটিতে গাঢ় সবুজ, একটিতে কমলা আর অন্যটিতে হলুদ রঙের প্রলেপ দেওয়া হয়। পুরীর আদলেই রথযাত্রা উৎসবের আগে প্রতিটি রথকে রঙিন কাপড় দিয়ে মুড়ে ফেলার কথা ছিল। তৈরি করা হয়েছিল রথের চূড়াও। দিঘা নবনির্মিত মন্দির থেকে ওল্ড দিঘার সমুদ্র তটে যে জগন্নাথ মন্দির রয়েছে সেখান পর্যন্ত রথ টানার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল।
রথযাত্রার পথ সুগম করতেও একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে জেলা প্রশাসন। নবনির্মিত মন্দিরের সামনের রাস্তায় সমস্ত অস্থায়ী দোকান ও ঝুপড়ি সরিয়ে ফেলা হয়। প্রতিনিয়ত মাইকে প্রচার করে রথ-সড়ক ও আশপাশের এলাকায় অবৈধ দোকান না বসানোর জন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়। জল-কাদা ঠেলে রোলার চালিয়ে লাল মাটি ফেলে রাস্তাটিকে দ্রুত মেরামত করার কাজও সম্পন্ন হয়েছিল। তবে, এবার আর দিঘায় রথযাত্রা হচ্ছে না।