‘দিদি তো বলেননি…’ কলকাতার ফুটপাত থেকে কতটা সরলেন হকাররা, কী বলছেন তাঁরা?
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৫ জুলাই ২০২৪
আর কয়েক মাস পরেই পুজো। আর এই সময়টাতেই হকারদের বিক্রিবাটা বাড়তে থাকে। কিন্তু তার আগেই নবান্ন থেকে ধমক দিয়েছেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী। মূলত ফুটপাত জবরদখল কেন হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তারপর থেকেই পুলিশের অতিসক্রিয়তা একেবারে চোখে পড়ার মতো। কলকাতার বিভিন্ন ফুটপাতের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে যাঁরা হকারি করতেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কী বলছেন হকাররা? খোঁজ নিল হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
গড়িয়াহাট, ধর্মতলা কিংবা লিন্ডসে স্ট্রিট গত কয়েকদিনে ছবিটা কেমন যেন বদলে গিয়েছে। হকাররা সব সরে গিয়েছেন। কলকাতার ফুটপাত একেবারে হকার শূন্য হয়ে গিয়েছে এমনটা নয়। হকার আজও আছে কলকাতার ফুটপাতে। কিন্তু কিছুটা হলেও সেই আগের দাপট কমেছে। ধর্মতলা এলাকায়, লিন্ডসে স্ট্রিটে ঘুরলেই দেখা যাচ্ছে উপরের প্লাস্টিকের ছাউনির অনেকটাই তাঁরা সরিয়ে দিয়েছেন।
একাধিক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ফুটপাতের যতটা অংশজুড়ে তারা আগে ব্যবসা করতেন সেই অংশ থেকে তারা সরে গিয়েছেন। হকারদের একাংশের দাবি, ফুটপাতের মধ্য়েই হলুদ দাগ কাটা অংশ রয়েছে তার মধ্য়েই তাঁরা ব্যবসা করছেন। পথচারীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেটা খেয়াল রাখা হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই আসছে পুলিশ।
আসলে কলকাতার ফুটপাত ঠিক কাদের সেই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি আজও।
বিপুল সংখ্য়ক পরিবার এই ফুটপাতের ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে তাঁদের তড়িঘড়ি সরিয়ে দিলে এত মানুষ রাতারাতি বেকার হয়ে যাবেন। সেক্ষেত্রে সরকার প্রাথমিকভাবে কিছুটা ধমক চমক দেখালেও বর্তমানে কিছুটা ধীরে চলো নীতি নিয়েছে।
লিন্ডসে স্ট্রিটে দীর্ঘদিন ধরেই ফুটপাতের ধারে ব্য়বসা করেন মহম্মদ রেজাউল, মহম্মজ শামিমরা। তাঁরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এখানে রয়েছি। পথচারীদের কোনও সমস্যা হোক এটা আমরাও চাই না। তবে আমাদেরও পরিবার রয়েছে। এখান থেকে সরিয়ে দিলে সব শেষ হয়ে যাবে।
মহম্মদ আকবর হোসেন, মহম্মদ ঈশা, ,সমরেশ বেরা-রা বলেন, কেউ ৩০ বছর কেউ ৩৫ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। গোটা পরিবার আমাদের মুখ চেয়ে রয়েছে। দিদি সরিয়ে দিলে আমরা কোথায় যাব? তাছাড়া দিদি তো একবারও বলেননি যে হকারদের সরিয়ে দেওয়া হবে। আমরা হলুদ দাগের মধ্যেই রয়েছি। প্রচুর বাংলাদেশি পর্যটক এখানে আসেন। কলকাতায় এলেই লিন্ডসে স্ট্রিট, ধর্মতলায় তাঁরা আসেন। আমাদের সরিয়ে দিলে পরিবারগুলো না খেতে মরবে।
প্রশ্ন শুনেই, হকারদের একাংশের দাবি, এনিয়ে কিছু বলব না। আমরা শান্তিতে কারোর অসুবিধা না করে ব্যবসা করতে চাই। সরকার যে নিয়ম মানতে বলবে সেটাই মানব। কিন্তু আমাদের পেটে লাথি মারবেন না। পরিবারগুলো শেষ হয়ে যাবে।